বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
বৃহস্পতিবারও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল — জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের আগে ও পরে একই ধরনের পরিস্থিতি দেখা গেছে, কার্যত তিনি কোনো নতুন তথ্য দেননি। তবুও, বর্তমানে মার্কেটে এই পেয়ার বিক্রির জন্য সত্যিকার অর্থে কোনো যৌক্তিক কারণের প্রয়োজন নেই। কেবল কয়েক দিন আগেও কাঠামোগতভাবে পাউন্ডের মূল্যের ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছিল, তাই অযৌক্তিক মুভমেন্টগুলো তখন কিছুটা গ্রহণযোগ্য ছিল। কিন্তু এখন পাউন্ডের তীব্র দরপতন হচ্ছে, এবং এর পেছনে স্পষ্ট ও নির্ধারিত কোনী কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না — যদি না আপনি অস্পষ্টভাবে "ঝুঁকি-গ্রহণ না করার প্রবণতা বৃদ্ধির" মতো ব্যাখ্যায় ফিরে যান।
যেভাবেই হোক, বর্তমান মুভমেন্ট সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক, এবং বিষয়টি স্বীকার করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।
এই সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, তাই অভ্যন্তরীণ কোনো কারণ পাউন্ডের দরপতনের জন্য দায়ী নয়। সপ্তাহের প্রথমার্ধেও এমন কিছু ঘটেনি যা সরাসরি দরপতনের কারণ হতে পারে — জার্মানির শিল্প উৎপাদন প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল বা ফ্রান্সের রাজনৈতিক সংকট ব্রিটিশ অর্থনীতির সঙ্গে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নয়। এছাড়া, আমরা এটাও বিশ্বাস করতে পারছি না যে হঠাৎ করে ডলার বা ট্রাম্পের নীতিমালার মার্কেটের ট্রেডারদের মনোভাব প্রতি নাটকীয়ভাবে পাল্টে গেছে। ট্রেডাররা বিগত আট মাস ধরে আতঙ্কের কারণে ডলার বিক্রি করে আসছিল — আর এখন তারা হঠাৎ করে আবারও আগ্রাসিভাবে ডলার ক্রয় করছে... কিন্তু কেন? সার্বিক পরিস্থিতি কোনোভাবেই পাল্টায়নি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের চার্ট অনুযায়ী গতকাল দুটি কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপিয়ান সেশনে, মূল্য 1.3413–1.3421 জোন থেকে রিবাউন্ড করে এবং দিনের বেশিরভাগ সময় নিম্নমুখী মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়। এরপর মার্কিন সেশনে, মূল্য 1.3329–1.3331 লেভেল ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, যার ফলে শর্ট পজিশন হোল্ড করে রাখা সম্ভব হয়। দিনের শেষ মুহূর্তে, ম্যানুয়ালি মুনাফা নেওয়া যেত, কারণ কোনো বাই সিগন্যাল গঠিত হয়নি।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে দেখা যাচ্ছে যে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নতুন করে নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হতে শুরু করেছে। যেমনটি আমরা আগেও বলেছিলাম, এখনও ডলারের শক্তিশালী মূল্য বৃদ্ধির জন্য কোনো গ্রহণযোগ্য মৌলিক কারণে নেই, তাই আমরা এখনও 2025 সালের পূর্ণাঙ্গ বুলিশ প্রবণতা ফিরে আসার প্রত্যাশাই করছি। তবে আপাতত মার্কেটে সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। পাউন্ডের দরপতন হচ্ছে, এবং এর পেছনে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। আপনি চাইলে লোয়ার টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল সেটআপ দেখে স্ক্যালপিং করতে পারেন, তবে এখন যেকোনো টাইমফ্রেমেই এই পেয়ারের মূল্যের যুক্তিহীন ও অনিশ্চিত মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার, 1.3259-এর দিকে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট চলমান থাকতে পারে, কারণ 1.3329–1.3331 এরিয়া ইতোমধ্যে ব্রেক করাক হয়েছে। তবুও, এখনো বিশৃঙ্খল মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে, তাই কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন ঘটার সম্ভাবনাও রয়েছে, এবং লেভেল ও জোনগুলো একদমই উপেক্ষিত হতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে নিম্নলিখিত লেভেলগুলোতে ট্রেডিং করা যেতে পারে: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, এবং 1.3763।
শুক্রবার যুক্তরাজ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান কনজ্যুমার সেনটিমেন্ট ইনডেক্স প্রকাশিত হবে। এটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন না হলেও, মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতিতে ডলার কেনার জন্য আর অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফলের প্রয়োজন হয় না — যেকোনো অজুহাতই যথেষ্ট।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।