সোমবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
সোমবার EUR/USD পেয়ারের মূলত সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। ইউরোপীয় সেশনের সময় এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট হতে দেখা যায়, যা মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। সোমবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা এমনকি স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন অর্থনৈতিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়নি। কোনো উল্লেখযোগ্য ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টও ছিল না।
শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের ওপর নতুন করে 100% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন — যেটি কার্যত বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের এক নতুন পর্বের সূচনা করে। তবুও, ফরেক্স মার্কেটে ডলারের দর খুব একটা না কমে বরং অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীলও ছিল। একটানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মার্কেটের ট্রেডাররা যুক্তরাষ্ট্রের নেতিবাচক অর্থনৈতিক খবরগুলোকে উপেক্ষা করে চলেছে। আমরা মনে করি, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের বর্তমান নিম্নমুখী মুভমেন্ট পুরোপুরিভাবে অযৌক্তিক — অথবা এটি মার্কেট-মেকারদের কৃত্রিম ম্যানিপুলেশনের ফল। ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। দৈনিক টাইমফ্রেমে ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে মুভমেন্ট বজায় রয়েছে, আর একমাত্র গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যাই এটাই হতে পারে যে, এখনও এই পেয়ারের মূল্য সেই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যেই রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে আনুষ্ঠানিকভাবে মাত্র একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনের সময়, মূল্য 1.1584 লেভেলে পৌঁছায় এবং সেখান থেকে রিবাউন্ড করে। তবে মাত্র ৫ মিনিটের মতো এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা গেছে।
আমরা ধারণা করেছিলাম যে সোমবার মার্কেটে হয়তো স্বল্প ভোলাটিলিটির সাথে এক ধরনের ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যাবে, কিংবা ট্রাম্প কর্তৃক নতুন শুল্ক ঘোষণার প্রেক্ষিতে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যেতে পারে। বাস্তবে, ইউরোপীয় সেশনেই এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এই পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনা নেই।
মঙ্গলবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্য একাধিকবার ট্রেন্ডলাইন অতিক্রম করেছে, কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আবার নিম্নমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়েছে। আমরা এই পেয়ারের মূল্যের এই ধরনের মুভমেন্টকে একেবারেই অযৌক্তিক বলে মনে করছি। ডলারের জন্য সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত নেতিবাচক রয়ে গেছে, তাই মার্কিন ডলারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করা হচ্ছে না।
আমাদের দৃষ্টিতে, যেমনটি আগেও বলেছি, মার্কিন ডলারের মূল্যের শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করা যেতে পারে — যা আমরা বর্তমানে প্রত্যক্ষ করছি।
মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের পেছনে দৃঢ় কোনো যৌক্তিকতা নেই, বরং তা অনেকটাই 'নয়েজ'-এর মতো বলে মনে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে চলমান দরপতনের পরে একটি কারেকশন শুরু হতে পারে, বিশেষ করে ট্রাম্প কর্তৃক নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণার ফলে মার্কেটকে যেভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা বিবেচনায় নিলে। তবে অনুমান করার চেয়ে 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে গঠিত ট্রেডিং সিগন্যালের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া অধিক যুক্তিযুক্ত হবে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী, নিচের লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা যেতে পারে: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988।
মঙ্গলবার ইউরোজোন থেকে জার্মানির শিল্প উৎপাদন এবং ZEW অর্থনৈতিক মনোভাব সূচক সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যদিও এগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন, তবে এগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন নয়। যুক্তরাষ্ট্রে জেরোম পাওয়েল বক্তৃতা প্রদান করবেন, যা কিছুটা তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে, তবে কোনো মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত না হওয়ায় পাওয়েলের বক্তব্যের প্রভাব সীমিতই হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।