সোমবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য়ের কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট দেখা যায়নি। যখন দিনের প্রথমার্ধে ইউরোর মূল্য (অজানা কারণে) কিছুটা নিম্নমুখী হয়ে পড়ে, তখন ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য দিনের পুরো সময়জুড়ে মূলত স্থিরই ছিল। তবে সোমবার গভীর রাতে এবং মঙ্গলবারের শুরুর দিকে GBP/USD পেয়ারের মূল্য একটি ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করতে সক্ষম হয়—যা দীর্ঘদিন পর একটি যৌক্তিক এবং প্রতীক্ষিত ট্রেন্ড রিভার্সালের ইঙ্গিত দেয়।
মনে করিয়ে দেই যে গত দুই সপ্তাহ ধরে চলমান ব্রিটিশ মুদ্রার দরপতনের পক্ষে খুব কম মৌলিক কারণ ছিল, এবং একই সময়ে মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধির জন্য তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ ছিল না। আমরা মাঝে মাঝে টেকনিক্যাল কারেকশনের সম্ভাবনাকে অস্বীকার করছি না এবং দৈনিক টাইমফ্রেমে ফ্ল্যাট রেঞ্জের উপস্থিতিও স্বীকার করছি। তাই সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতনের বিষয়টি শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারণের মাধ্যমেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে GBP/USD পেয়ারের এই দরপতন একেবারেই অযৌক্তিক। সোমবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্র—কোনো দিক থেকেই উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি বা কোনো প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়নি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে সোমবার 1.3329–1.3331 এরিয়ায় একটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়, তবে সারাদিন ধরেই এই পেয়ারের মূল্যের অনেকটাই সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখানে—না মূল্য স্পষ্টভাবে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, না নিম্নমুখী হয়েছে। প্রত্যাশিত ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যায়নি, তবে পূর্বাভাস অনুযায়ী ফ্ল্যাট মুভমেন্টই দেখা গেছে। তাই, অনেক নতুন ট্রেডার হয়তো পজিশন ওপেন করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু মার্কিন সেশন শুরু হওয়ার আগেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে সোমবার কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্টের সম্ভাবনা নেই।
মঙ্গলবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা ধীরে ধীরে শেষ হচ্ছে। আগেই যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধির বাস্তব কোনো কারণ নেই। তাই মধ্যমেয়াদে আমরা শুধুই এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। তবে মার্কেটে এখনও বেশ অদ্ভুত মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। এখনো পাউন্ডের কিছুটা দরপতন হচ্ছে, কিন্তু এর পিছনে কোনো যৌক্তিক মৌলিক ব্যাখ্যা নেই—যা শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারণে হচ্ছে। মূল্যের মুভমেন্ট অনেক সময়ই অযৌক্তিক হয়ে থাকে।
মঙ্গলবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, যেহেতু এই পেয়ারের মূল্য ইতোমধ্যেই ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে। 1.3329–1.3331 এরিয়ার উপরে যদি একটি শক্তিশালী কনসোলিডেশন হয়, তাহলে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হতে পারে—যদিও সোমবার এই পেয়ারের মূল্য এই জোন পুরোপুরি উপেক্ষা করেছিল।
বর্তমানে ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা যেতে পারে:
1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য থেকে বেকারত্ব, নতুন বেকারভাতার আবেদন এবং মজুরি সংক্রান্ত একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে এগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন নয়, তবুও মার্কেটে এগুলোর কিছুটা প্রাসঙ্গিকতা থাকবে পারে—কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকারিও কার্যক্রমের শাটডাউনের কারণে আমেরিকান ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস বাধ্যতামূলকভাবে কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের একটি বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে, যা কিছুটা তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।