মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
মঙ্গলবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্য উর্ধ্বমুখী এবং নিম্নমুখী – উভয় দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে। তবে সেশনের শুরুতে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতনের জন্য বাড়তি কারণও ছিল। গতকাল সকালের দিকে যুক্তরাজ্যে বেকারত্বের হার ও জবলেস ক্লেইমস সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা পাউন্ডে সেলিং চাপ সৃষ্টি করে। পূর্বাভাস ও প্রত্যাশার বিপরীতে, বেকারত্বের হার ০.১% বেড়ে যায় এবং নতুন বেকার ব্যক্তির সংখ্যা ২৬,০০০ জন বৃদ্ধি পেয়েছে— যা স্পষ্টভাবেই পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে যায়। ফলে, পাউন্ড স্টার্লিং-এর দরপতন পুরোপুরি যৌক্তিক ছিল।
দিনের দ্বিতীয়ার্ধে, জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য পাউন্ডের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসে। তিনি আবারও বলেন যে সুদের হার কমানোর ব্যাপারে ফেডারেল রিজার্ভের নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই এবং সকল সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র আগত সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলের ভিত্তিতে নেওয়া হবে। কিছুক্ষণ পরেই, ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দেন যে যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে উদ্ভিজ্জ তেল আমদানি বন্ধ করে দিতে পারে—এই মন্তব্যের ফলে মার্কিন ডলার দুর্বল হয় এবং এটির দরপতন ঘটে। সার্বিকভাবে, আমরা ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি, বিশেষ করে এই পেয়ারের মূল্য ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পরে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে EUR/USD-এর তুলনায় GBP/USD পেয়ারের বেশি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে এবং তুলনামূলকভাবে বেশি ভোলাটিলিটি দেখা গিয়েছে। সকালের দিকে, 1.3329–1.3331 জোন থেকে একটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়। এরপর, এই পেয়ারের মূল্য কমে 1.3259 লেভেল পৌঁছায়। উক্ত সাপোর্ট লেভেল থেকে দিনের বিভিন্ন সময় অন্তত তিনবার রিবাউন্ড হয়েছে এবং দিনের শেষে পেয়ারটির মূল্য পুনরায় 1.3329–1.3331 এরিয়ার মধ্যে ফিরে আসে। ফলে, নতুন ট্রেডাররা দুটি ট্রেডিং পজিশন ওপেন করতে পারতেন, এবং উভয় ট্রেড থেকেই মুনাফা করা যেতে পারত।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের দৃষ্টিতে বেশ আগেই শেষ হওয়া উচিত ছিল। আগেও উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য কোনো শক্তিশালী মৌলিক অনুঘটক নেই, তাই আমরা এখনও একটি রিবাউন্ডের পর এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার প্রত্যাশা করছি। বর্তমানে মার্কেটে অদ্ভুত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন চলমান থাকলেও, এর পেছনে — টেকনিক্যাল কারণ ছাড়া — কোনো স্পষ্ট মৌলিক কারণ নেই। মার্কেটে এই পেয়ারের মূল্যের চলমান মুভমেন্ট অনেকটাই অযৌক্তিক বলে মনে হচ্ছে।
বুধবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন অব্যাহত থাকার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হতে পারে, যেহেতু মূল্য ইতোমধ্যেই ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে। 1.3329–1.3331 জোন নিশ্চিতভাবে ব্রেকআউট করে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলে সেটি লং পজিশন ওপেন করার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে, যেখানে মূল্যের 1.3413-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলসমূহ 1.3102-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, 1.3574-1.3590, 1.3643-1.3652, 1.3682, and 1.3763। বুধবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্র — কোনো দেশেই গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, সুতরাং সারাদিন ধরে মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে অথবা এই পেয়ারের মূল্যের স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।