সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের পর্যালোচনা:
বুধবার খুব কম সংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। দিনের মধ্যে একমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন হলো ইউরোজোনের শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত, যা আবারও শক্তিশালী ফলাফল প্রদর্শনের মাধ্যমে ট্রেডারদের প্রভাবিত করবে এমনটি প্রত্যাশিত নয়। তবে, ইতোমধ্যে এই সূচকের দুর্বল ফলাফলের পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে, তাই তা অতিক্রম করাটা তুলনামূলকভাবে সহজ হতে পারে। সারাদিনে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সম্ভাবনা নেই।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বুধবার বেশ কয়েকটি ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নির্ধারিত থাকলেও, শুরুতেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা জরুরি। জেরোম পাওয়েল ও ক্রিস্টিন লাগার্ডে উভয়েই গত কয়েক সপ্তাহে একাধিকবার বক্তব্য দিয়েছেন। এর ফলে, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) এবং ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)-এর কাছ থেকে স্বল্প-মেয়াদে ট্রেডাররা কী ধরনের অবস্থান প্রত্যাশা করতে পারে, তা এখন বেশ স্পষ্ট।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কার্যক্রমের অচলাবস্থার কারণে গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশনা বন্ধ রয়েছে। নতুন প্রতিবেদন ছাড়া ফেডের কর্মকর্তাদের জন্য তাদের নীতিগত অবস্থানে পরিবর্তন আনার কোনো দৃঢ় ভিত্তি তৈরি হচ্ছে না।
ইসিবি সম্ভবত তাদের মুদ্রানীতির নমনীয়করণ ইতোমধ্যে শেষ করেছে, কারণ তারা সফলভাবে মূল্যস্ফীতি তাদের লক্ষ্যমাত্রায় নামিয়ে এনেছে।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ডও সুদের হার হ্রাসের দিক থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিরতিতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, কারণ যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার বর্তমানে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ পর্যায়ে রয়েছে।
সুতরাং, আপাতত কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো প্রকার গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত পরিবর্তন বা উল্লেখযোগ্য কোনো ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে না।
উপসংহার:
সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে এখনও EUR/USD এবং GBP/USD উভয় পেয়ারের মূল্যের এলোমেলো বা অযৌক্তিক মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। এখন পর্যন্ত আমরা এই দুটি পেয়ারের যে দরপতন হতে দেখেছি, তা মৌলিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা কঠিন।
আজ ইউরোর মূল্য 1.1571–1.1584 জোনের উপরে কনসোলিডেশন করার পর 1.1655–1.1666 এরিয়ার দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে পুনরায় ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে।
ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রেও, ট্রেন্ডলাইন এবং 1.3329–1.3331 রেজিস্ট্যান্স এরিয়ার উপরে কনসোলিডেশনের পর পুনরুদ্ধারের ধারা অব্যাহত থাকতে পারে, যেখানে মূল্যের পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3413–1.3421 জোন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।