শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
শুক্রবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য যতটা না বেড়েছে তার চেয়ে বেশি পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, গত সপ্তাহেই টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী বুলিশ প্রবণতার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল; সেই অনুযায়ী, এখন ট্রেডাররা সম্পূর্ণ যৌক্তিকভাবেই ইউরোর দর বৃদ্ধির আশা করতে পারেন। এটি উল্লেখযোগ্য যে সম্প্রতি (আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে), ইউরোর দরপতনের জন্য খুব কম কারণ ছিল, এবং মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির জন্যও তেমন কোনো কারণ ছিল না। তবে দৈনিক টাইমফ্রেম এখনো এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে, যার ফলে প্রায় তিন সপ্তাহব্যাপী যে দরপতন দেখা গেছে, তা অনেক প্রশ্ন উদ্রেক করেছে।
শুক্রবার প্রকাশিত ইউরোজোনের সেপ্টেম্বর মাসের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বাভাস এবং প্রাথমিক অনুমান - উভয়ের চেয়ে বেশি এসেছে। মুদ্রাস্ফীতির হার যত বেশি হবে, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সুদের হার আরও কমানোর সম্ভাবনা ততটাই কমে যাবে। ফলে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ইউরোর জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু দেখা গেছে, ট্রেডাররা এই প্রতিবেদনটির ফলাফল উপেক্ষা করেছে, যেমনটা প্রত্যাশিত ছিল। দিনের দ্বিতীয়ার্ধে, ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বিবৃতির মাধ্যমে মার্কেটে উত্তেজনা কিছুটা কমিয়ে দেন, যেখানে তিনি বলেন যে চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে এবং বাড়তি শুল্ক স্থায়ী হবে না। এই ভিত্তিতে, ডলারের দর সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবারের সেশন চলাকালীন সময়ে কার্যত কোনো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি। সন্ধ্যার দিকে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666 এরিয়ার দিকে হ্রাস পায়, কিন্তু তখন পর্যন্ত বেশিরভাগ ট্রেডারই উইকএন্ডের জন্য ট্রেডিং থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আজ, এই কারেন্সি পেয়ারের মূল্য এই এরিয়াতেই অবস্থান করছে এবং এখনো পর্যন্ত নতুন কোনো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে অবশেষে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কিছুটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য আবারও ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে এবং এখনও সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট মার্কিন ডলারের জন্য বেশ প্রতিকূল। তাই, আমরা 2025 সালে পরিলক্ষিত বুলিশ প্রবণতার পুনরায় শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি।
সোমবারে EUR/USD পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ দিনের বেলা কোনো উল্লেখযোগ্য মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। নতুন ট্রেডাররা 1.1655–1.1666 এরিয়ার আশেপাশে একটি সিগন্যাল গঠনের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। তবে, সামগ্রিকভাবে আজ এই পেয়ারের মূল্যের দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় নেওয়া উচিত: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। সোমবার ইউরোজোন ও যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই। তাই, আজ আবারও এই পেয়ারের মূল্যের খুবই স্বল্প মাত্রার ভোলাট্যালিটি বা অস্থিরতা দেখা যেতে পারে, কিন্তু ইউরোর মূল্যের মন্থর ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ এ মুহূর্তে এই ধরনের মুভমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় সব কারণই বিদ্যমান।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।