শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
শুক্রবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য সামান্য নিম্নমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার উত্তেজনা কিছুটা হ্রাস পাওয়ার প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। উল্লেখযোগ্য যে, উইকএন্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন এবং বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে তৃতীয় দফা বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, এবং এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আন্দোলন বলে মনে করা হচ্ছে। আমেরিকার ২,৬০০টিরও বেশি শহরে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যার সবগুলো কিন্তু শান্তিপূর্ণ বা নিয়মতান্ত্রিক ছিল না।
যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমেরিকার জনগণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে, যা তার বৈদিশিক নীতি ও অভ্যন্তরীণ নীতিমালার বিচারে যথেষ্ট যৌক্তিক। ফলস্বরূপ, আমরা এখনো মনে করি যে ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে মার্কিন ডলারের ব্যবহার হ্রাস করছে। অনেক মানুষ আমেরিকা ছাড়ছে। এবং ইতোমধ্যেই এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, আগামি সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যক্রম চালিয়ে ক্রমশ কঠিন হয়ে যাবে। সেই কারণে, আমরা মার্কিন ডলারের আরও দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করছি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী, শুক্রবার তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। তবে তিনটি সিগন্যালই ভুল ছিল, কারণ সারাদিন জুড়ে এই পেয়ারের মূল্য কমবেশি স্থির ছিল। 1.3413–1.3421 এরিয়ার মধ্যে তিনবার সিগন্যাল গঠিত হলেও, প্রত্যাশিত দিকে মূল্য ২০ পিপস পর্যন্তও অগ্রসর হতে পারেনি। পুনরায় মনে করিয়ে দিচ্ছি, ট্রেডিং সিগন্যাল যতই ভালো হোক না কেন, যদি ভোলাট্যালিটি প্রায় শূন্য থাকে, তাহলে মুনাফা করা সম্ভব নয়।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেম অনুযায়ী, এখন অবশেষে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন বুলিশ প্রবণতা গঠিত হতে শুরু করেছে, যা বৈশ্বিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার একটি নতুন সূচনা নির্দেশ করতে পারে। আগের মতোই, দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে কোনো মৌলিক কারণ নেই, তাই আমরা মাঝারি মেয়াদে ডলারের দরপতনের প্রত্যাশা করছি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালা, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে তিনি শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন, তার ফলে মার্কেটের ট্রেডাররা মার্কিন ডলার থেকে আরও বেশি করে বিনিয়োগ সরিয়ে দিচ্ছে।
সোমবার, GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু করার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হতে পারে, কারণ সার্বিক প্রবণতা এখন বুলিশে পরিবর্তিত হয়েছে। 1.3413–1.3421 এরিয়া থেকে একটি বাউন্স ঘটলে, লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে যেখানে মূল্যের 1.3466–1.3475 এরিয়ার দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে, এই পেয়ারের মূল্য যদি 1.3413–1.3421 জোনে নিচে কনসোলিডেট হয়, তবে নতুন করে একটি নিম্নমুখী কারেকশন শুরু হতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী, বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলোকে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763।
সোমবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন বা অর্থনৈতিক ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। এর ফলে, সারাদিনজুড়ে ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো খুব বেশি কিছু থাকবে না এবং মার্কেটে ভোলাট্যালিটি আবারও খুবই সীমিত পর্যায়ে থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।