মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার, দিনের বেশিরভাগ সময়জুড়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্য ধীরে ধীরে এবং স্বল্প মাত্রার ভলাটিলিটির সাথে নিম্নমুখী হয়েছে। সাম্প্রতিক সেশনে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতনের মাত্রা ইউরোর তুলনায় কিছুটা কম হলেও, উভয় পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টই বেশ অযৌক্তিক মনে হচ্ছে এবং এর পেছনে কোনো স্পষ্ট মৌলিক ভিত্তি নেই। মার্কিন ডলারের মূল্যের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার বিষয়টি কেবলমাত্র কিছু টেকনিক্যাল কারণের মাধ্যমেই ব্যাখ্যা করা সম্ভব। মনে রাখতে হবে যে, ইউরো ও পাউন্ড উভয়ই বর্তমানে দৈনিক টাইমফ্রেমে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে ট্রেড করছে, যা এই রেঞ্জের মধ্যে মূল্যের ইচ্ছেমতো ও এলোমেলো মুভমেন্ট ঘটাচ্ছে। ঘন্টাভিত্তিক চার্টে, এই পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে বলে মনে হয়েছিল, যা বর্তমানে একটি টেকনিক্যাল পুলব্যাকের মধ্যে রয়েছে।
আজ থেকে, ট্রেডাররা গুরুত্বপূর্ণ কিছু সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন পেতে শুরু করবেন, যা মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে, যদিও এই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশের আগেই ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া অনুমান করা বেশ কঠিন। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অপরিবর্তিত রয়েছে: বৈশ্বিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো ডলারের তুলনায় ইউরো ও পাউন্ডকে বেশি সহায়তা করে যাচ্ছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের চার্টে, মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মতই রাতের সেশনে এই পেয়ারের একটি মাত্র সেল সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। যারা এই সিগন্যাল অনুযায়ী ট্রেড করেছেন, তারা প্রায় ৩৫ পিপস লাভের সুযোগ পেয়েছিল। তবে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনও বেশ অস্থির এবং ভলাটিলিটিও বেশ কম, যা সব ট্রেডারের মাথায় রাখা উচিত।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন বুলিশ প্রবণতা গঠিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, যা সম্ভবত ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত সামগ্রিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পরবর্তী ধাপ হতে পারে। পূর্বেও বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য বর্তমানে কোনো স্থিতিশীল মৌলিক কারণ নেই। তাই, মধ্যমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা করছি। তারপরও, বর্তমানে মার্কেটে অত্যন্ত নিম্ন মাত্রার ভলাটিলিটি বিরাজ করছে এবং এই পেয়ারের মূল্য এখনো কোনো শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম প্রদর্শন করেনি।
বুধবার, আবারও এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হওয়ার প্রচেষ্টা দেখা যেতে পারে, কারণ বর্তমানে সার্বিক প্রবণতা বুলিশে পরিণত হয়েছে। তবে, লং পজিশন ওপেন করার আগে অবশ্যই প্রথমে 1.3413–1.3421 জোনের উপরে এই পেয়ারের কনসোলিডেশন হতে হবে। বিকল্পভাবে, যদি মূল্য 1.3329–1.3331 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে তবে বুলিশ পজিশনে এন্ট্রি করা যেতে পারে—যদিও বর্তমানে বিয়ারিশ চাপ অব্যাহত থাকার পর সম্ভাব্য রিভার্সালের সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে।
৫-মিনিটের চার্টে এখন যেসব লেভেলে ট্রেড করা যেতে পারে তা হলো: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, এবং 1.3763।
বুধবার, যুক্তরাজ্যে সেপ্টেম্বরে ভোক্তা মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে — যা চলতি সপ্তাহের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর একটি। এই প্রতিবেদনটি মার্কেটে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। গত এক বছর ধরে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীলভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ড শীঘ্রই সুদের হার কমাবে এমন সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। এ কারণে এটি পাউন্ডের জন্য মৌলিকভাবে ইতিবাচক বিষয় হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে?
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- মারে লেভেলগুলো প্রবণতা এবং কারেকশনের সীমা বা রেঞ্জ নির্ধারণে সাহায্য করতে পারে।
- ভলাটিলিটি লেভেল (লাল হরাইজন্টাল লাইন) মূল্যের সাম্প্রতিক মুভমেন্টের উপর ভিত্তি করে মূল্যের সম্ভাব্য রেঞ্জ নির্ধারণ করে।
- CCI ইনডিকেটর ওভারবট (+250-এর উপরে) বা ওভারসোল্ড (-250-এর নিচে) জোনে এন্ট্রির সময় রিভার্সাল সিগন্যাল প্রদান করে।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।