দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রধান বাণিজ্য আলোচকরা ঘোষণা দিয়েছেন যে তারা বেশ কিছু বিতর্কিত বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছেন, যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদন এবং বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাস সম্ভাবনা উন্মুক্ত করেছে।
এই বিবৃতি বৈশ্বিক ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে আশাবাদের ঢেউ সৃষ্টি করেছে — যা দীর্ঘদিন ধরে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকির কারণে ভারাক্রান্ত ছিল। শুল্ক হ্রাস ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা অপসারণের সম্ভাবনা পারস্পরিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন সুযোগ উন্মুক্ত করতে পারে। যেসব কোম্পানি মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা এখন পুনরায় বিনিয়োগ এবং তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করতে পারবে, যার মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান ও মুনাফা বাড়তে পারে। তবে, এই ইতিবাচক পরিস্থিতি সত্ত্বেও, বেশ কয়েকটি প্রশ্ন এখনো অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে। চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশিত হয়নি এবং বিনিয়োগকারীরা এই চুক্তির কার্যকর বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ও এর নিশ্চয়তার জন্য অপেক্ষা করছে। একই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে, উভয় পক্ষের স্বার্থ পুরোপুরিভাবে এক নয় — তাই ভবিষ্যতে নতুন বিরোধ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

মালয়েশিয়ায় দুই দিনের আলোচনার শেষে, রোববার এক চীনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে উভয় পক্ষ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, ফেন্টানিল এবং শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট পরবর্তীতে জানান, চীনা পণ্যের উপর ১০০% শুল্ক আরোপের হুমকি কার্যত তুলে নেওয়া হয়েছে এবং তিনি প্রত্যাশা করেন, চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন ক্রয় করবে ও বিরল খনিজ উপাদানের উপর ব্যাপক পরিসরের নিয়ন্ত্রণ স্থগিত রাখবে। বেসেন্ট বলেন, "আমি মনে করি ১০০% শুল্ক আরোপের হুমকি আর নেই, ঠিক যেমনটি চীনের পক্ষ থেকে বৈশ্বিক পর্যায়ে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগের প্রত্যক্ষ হুমকাও আর অবশিষ্ট নেই।" এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানিয়েছেন, চীন আগামী এক বছর বিরল খনিজ উপাদানে সীমাবদ্ধতা আরোপের বিষয়টি স্থগিত রাখবে, এবং পরে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেবে।
বেসেন্ট আরো জানান, ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে বিস্তৃত পরিসরে সমঝোতা হয়েছে, যা বর্তমানে কার্যকর শুল্ক বিরতি আরও দীর্ঘায়িত করবে, টিকটক বিক্রির মামলায় তৈরি হওয়া বিরোধ নিষ্পত্তি করবে, এবং আধুনিক পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিরল খনিজ উপাদানের সরবরাহকে সুনিশ্চিত করবে, যেগুলো সেমিকন্ডাক্টর থেকে শুরু করে জেট ইঞ্জিন তৈরির কাজেও প্রয়োজন হয়।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, উভয় পক্ষ থেকে আগত এই আশাব্যঞ্জক বার্তাগুলো সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পরিলক্ষিত পরিস্থিতির সাথে স্পষ্টভাবেই বিপরীত। এই সময়ে, বেইজিং নতুন রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছিল এবং ট্রাম্প পাল্টা বিপুল পরিমাণে নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন — যা বিশ্বজুড়ে দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির আবার সম্পূর্ণ বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছিল।
এখন, সকল মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রয়েছে আগামী সপ্তাহের শেষভাগে নির্ধারিত ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের বৈঠকের দিকে, যেটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর তাদের প্রথম সামনাসামনি বৈঠক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, সরাসরি আলোচনা এমন সমস্যাগুলো সমাধানের সবচেয়ে ভালো উপায়। ট্রাম্প বলেন, "আমরা অনেক বিষয়ে আলোচনা করবো। আমি মনে করি, এবার সত্যিকার অর্থেই বিস্তৃত পরিসরে চুক্তিতে পৌঁছানোর পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে।"
EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল পূর্বাভাস
বর্তমানে ক্রেতাদের লক্ষ্য হবে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1650 লেভেলে পুনরুদ্ধার করা। শুধুমাত্র এর পরই এই পেয়ারের মূল্যের 1.1675 লেভেলে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য 1.1725-এর দিকে অগ্রসর হতে পারে, তবে বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া এটি করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1755 লেভেল। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যায়, তাহলে মূল্য 1.1620 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় উল্লেখযোগ্য ক্রয় কার্যক্রমের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যদি বড় ক্রেতারা সেখানে সক্রিয় না হয়, তাহলে ধৈর্য ধরে 1.1600 লেভেল পুনরায় টেস্ট হওয়ার জন্য অপেক্ষা করাই ভালো হবে অথবা 1.1580 লেভেল থেকে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ খোঁজা যেতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল পূর্বাভাস
পাউন্ডের ক্রেতারা এই পেয়ারের মূল্যের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 1.3335 ব্রেক করানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। শুধুমাত্র এই লেভেল ব্রেকআউটের মাধ্যমেই মূল্যের 1.3355 লেভেলের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে — তবে মূল্যের এই লেভেলের উপরে ওঠা যথেষ্ট কঠিন হতে পারে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.3385 লেভেল। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যায়, তাহলে মূল্য 1.3305 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা আবারও নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা এতে সফল হয়, তাহলে এই রেঞ্জের ব্রেক করে মূল্য নিম্নমুখী হলে সেটি GBP/USD পেয়ারের বুলিশ পজিশনে বড় ধাক্কা দিতে পারে এবং মূল্য 1.3280 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে, সেখান থেকে সম্ভাব্যভাবে 1.3250-এর দিকেও দরপতন হতে পারে।