মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার খুবই স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার সাথে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। সারাদিন জুড়ে ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, তবে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতার সম্মুখীন হয়েছিল, যার ফলে দিনের প্রথমার্ধে ইউরোপীয় মুদ্রারও দরপতন হতে শুরু করে। দিনের দ্বিতীয়ার্ধে ইউরোর মূল্য কিছুটা পুনরুদ্ধার করে, কিন্তু স্থানীয় কারণে পাউন্ডের দরপতন অব্যাহত ছিল। অতএব, আমরা গতকাল ইউরোর মূল্যের যেটুকু তীক্ষ্ণ মুভমেন্ট দেখেছি, যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস বিবৃতি না দিলে তা হয়ত দেখা যেত না। দৈনিক ভিত্তিতে এই পেয়ারের মূল্যের মোট ভোলাটিলিটি ছিল 43 পিপস।
আজ সন্ধ্যায়, ফেডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে (বা বলা ভালো, শেষ হবে), তাই নতুন ট্রেডাররা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার প্রত্যাশা করতে পারেন। যদিও ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ট্রেডাররা ইতোমধ্যেই ওয়াকিবহাল রয়েছে। ফেড ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করতে পারে, পরপর দ্বিতীয়বারের মতো সুদের হার 0.25% হ্রাসের পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে। যুক্তি অনুযায়ী, আজও এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে, তবে লক্ষ্যণীয় যে, সম্প্রতি ইউরোর মূল্য বাড়ছে না, যদিও ইউরোর মূল্য বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সকল ভিত্তি রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, মঙ্গলবার শুধুমাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, কিন্তু স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি ও একরকম এলোমেলো মুভমেন্টের কারণে, যেকোনো ট্রেডিং সিগন্যাল, লেভেল বা জোন কাজে লাগিয়ে মুনাফা অর্জন করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে গিয়েছিল। মার্কিন ট্রেডিং সেশনের শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1655-1.1666 এরিয়ার কাছ থেকে বাউন্স করেছিল, যা পরবর্তীতে আর ব্রেক করা সম্ভব হয়নি। এরপর এই পেয়ার প্রায় ২০ পিপস দরপতনের শিকার হয়ে আবার 1.1655-1.1666 রেঞ্জে ফিরে আসে।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
এক ঘন্টার টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। একটি নতুন আপট্রেন্ড লাইন গঠিত হয়েছে, এবং সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের জন্য প্রতিকূল। ফলে, আমরা 2025 সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আবার শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি। যদিও দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনো এই পেয়ারের মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করছে, যা মার্কেটে স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি ও লোয়ার টাইমফ্রেমে অযৌক্তিক মুভমেন্টের মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বুধবার, নতুন ট্রেডাররা আবার 1.1655-1.1666 এরিয়া থেকে ট্রেড করতে পারেন। এই এরিয়া থেকে আরেকটি বাউন্স হলে সেটি শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়া ব্রেক করলে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবেই এই পেয়ারের মূল্যের কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করিনি, কারণ ভোলাটিলিটির মাত্রা এখনো অত্যন্ত কম।
৫ মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, এবং 1.1970-1.1988। বুধবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যা সম্ভাব্যভাবে মার্কেটে শক্তিশালী মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।