মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার GBP/USD পেয়ার আকস্মিকভাবে এবং তীব্রভাবে দরপতনের শিকার হয়, যেন একেবারে উপর থেকে কোনো পাথর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – উভয় দেশের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে তেমন কিছুই ছিল না, তাই ব্রিটিশ মুদ্রার এই আকস্মিক দরপতন অনেককেই দ্বিধা-দ্বন্দের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তবে দুপুরের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্পষ্ট হয়, যখন জানা যায় যে ব্রিটিশ ট্রেজারি সেক্রেটারি র্যাচেল রিভস ব্রেক্সিট নিয়ে নিজস্ব মতামত প্রদান করেছেন। তার মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করাটা একটি ভুল ছিল (যদিও তিনি বেশ কৌশলে এই ইঙ্গিত দিয়েছেন), এবং বর্তমানে যুক্তরাজ্য সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার ও জোরদার করার কাজ করছে। আমাদের দৃষ্টিতে, পাউন্ড বিক্রির জন্য এটি খুব একটা দৃঢ় ভিত্তি নয়, তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পাউন্ড প্রায় যেকোনো অজুহাতে দরপতনের সম্মুখীন হচ্ছে, আর মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা এখনো বৈশ্বিক মৌলিক প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করে চলেছে, যা এখনো মার্কিন ডলারের দরপতন এবং আসন্ন ভবিষ্যতে ঊর্ধ্বমুখী না হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করে। দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনো ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে কনসোলিডেশন অব্যাহত রয়েছে, তাই মার্কেটে পরিলক্ষিত এই পেয়ারের মূল্যের অযৌক্তিক মুভমেন্টের ক্ষেত্রে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, মঙ্গলবার দুটি কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3329-1.3331 এরিয়া ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, যার মাধ্যমে নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ পান। কিছু সময় পর 1.3259 লেভেল গঠিত হয়, যেখান থেকে মূল্য রিবাউন্ড করে। তাই, প্রথম ট্রেড থেকে প্রায় ৪৫ পিপস পর্যন্ত মুনাফা হতে পারত, আর দ্বিতীয় ট্রেডের ক্ষেত্রে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যাওয়ায় কোনো মুনাফা বা লোকসান হয়নি।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
এক ঘন্টার টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হতে শুরু করলেও তা খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে যেকোনো কারণেই হোক ব্রিটিশ পাউন্ড আবারও দরপতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, ডলারের মূল্যের দীর্ঘমেয়াদি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য বাস্তবিক অর্থে তেমন কোনো ভিত্তি নেই, তাই মধ্যমেয়াদে আমাদের দৃষ্টিতে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি যৌক্তিক। তবে, দীর্ঘমেয়াদে ফ্ল্যাট রেঞ্জ বা কনসোলিডেশনের প্রভাব অব্যাহত থাকায় এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক একটি পরিস্থিতি।
বুধবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের আরো নিম্নমুখী প্রবণতার সম্ভাবনা বজায় রয়েছে, যদিও আজ সন্ধ্যায় ফেডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে মুল সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3259 লেভেল ব্রেক করলে শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ পাওয়া যেতে পারে, যেখানে সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3203-1.3211 এরিয়া বিবেচনা করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.3259-এর উপরে স্থির থাকে, তাহলে লং পজিশনের কথা ভাবা যেতে পারে, যেখানে সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3329-1.3331 এরিয়া বিবেচনা করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো 1.3102-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, 1.3574-1.3590, 1.3643-1.3652, 1.3682, এবং 1.3763. বুধবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে আজ সন্ধ্যায় ফেডের বৈঠকের ফলাফল ঘোষণা করা হবে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে — যদিও ফেড কী সিদ্ধান্ত নেবে তা ট্রেডাররা আগে থেকেই জানেন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।