সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের পর্যালোচনা:

শুক্রবার বেশ কিছু সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। জার্মানিতে খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে, আর ইউরোজোন থেকে মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, গতকাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ একগুচ্ছ প্রতিবেদন ট্রেডাররা কার্যত উপেক্ষা করেছে। তাই আজকের এই দুটি প্রতিবেদন মার্কেটে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে—এমন সম্ভাবনা কম। বিভিন্ন কারণে এখনও ইউরো এবং পাউন্ড বিক্রি হচ্ছে, যেটিকে এখনো দৈনিক টাইমফ্রেমে মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জে অবস্থান করার প্রবণতার সঙ্গে যুক্ত করা যায়। পাশাপাশি, ইউরোজোনের কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক) বর্তমানে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) আর্থিক নীতিমালার ওপর খুব একটা প্রভাব বিস্তার করছে না এবং এটিকে অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:

শুক্রবার একাধিক ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নির্ধারিত রয়েছে। বিশেষ করে ফেডারেল রিজার্ভের সদস্যবৃন্দ— লরি লোগান, রাফায়েল বোস্টিক এবং লরেটা মেসটার—বক্তব্য দেবেন। তবে ফেডের সাম্প্রতিক বৈঠক মাত্র কয়েকদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছে, আর মার্কেটের ট্রেডাররা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তৃত তথ্য পেয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, ফেডের বেশিরভাগ কর্মকর্তাই বর্তমানে শ্রমবাজার এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন, যার ভিত্তিতে বছর শেষদিকের বৈঠকগুলোতে সুদের হারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের আবারও কিছুটা এলোমেলো বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে ট্রেডিং চলতে পারে। আজ সামগ্রিকভাবে অল্পই সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, ফলে ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা দুর্বল থাকতে পারে। ইউরোপীয় মুদ্রা বর্তমানে 1.1571-1.1584 এরিয়ার কাছাকাছি ট্রেড করছে, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য আজকের দিনটিতে একটি সম্ভাব্য এন্ট্রি পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ব্রিটিশ পাউন্ড 1.3102-1.3107 এবং 1.3203-1.3211 এরিয়ার মাঝামাঝি ট্রেড করছে, তাই নতুন ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা যুক্তিযুক্ত হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।