শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

শুক্রবারও GBP/USD পেয়ারের একটানা দরপতন অব্যাহত ছিল, তবে দিনের শেষভাগে এই পেয়ার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। স্মরণ করিয়ে দেই, ব্রিটিশ পাউন্ড এক মাস ধরে নিঃসন্দেহে কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়া ক্রমাগত দরপতনের শিকার হচ্ছে। শুক্রবার ইউরোজোনের মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাত্ত্বিকভাবে ইউরোপীয় মুদ্রার মূল্য হ্রাস পেতেই পারে, কিন্তু পাউন্ডের দরপতনের জন্য কোনো বাস্তবসম্মত কারণ ছিল না। সেদিন যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্র, কোন দেশেই উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিবেদন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি বা কোনো ইভেন্টও ছিল না। ফলে বলা যায়, এই পেয়ারের এই অযৌক্তিক দরপতন এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে দৈনিক টাইমফ্রেমে দেখা যাচ্ছে যে, দরপতনের পর এই পেয়ারের মূল্য সাইডওয়েজ চ্যানেলের নিম্নমুখী লাইন 1.3140-তে এসে পৌঁছেছে এবং গত তিনদিন ধরেই তা এই লেভেল ভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং, এটি একটি সম্ভাব্য নতুন দীর্ঘমেয়াদি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সূচনাবিন্দু হতে পারে, যার যথার্থ ভিত্তি দাঁড় করানোর জন্য মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট উপস্থিত আছে। ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে 1.3107 লেভেলটিকে একটি সাপোর্ট পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এই পেয়ারের মূল্য এই লেভেলের নিচে নেমে গেলে বুঝা যাবে যে, বৈশ্বিক পর্যায়ে এই অযৌক্তিক কারেকশনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, শুক্রবার একটি বাই ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল — সেসময় মূল্য 1.3102-1.3107 এরিয়া থেকে বাউন্স করেছিল। আমাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এই এরিয়াগুলো থেকে শুধু ৫০-৬০ পিপসের একটি বাউন্সই নয়, বরং নতুন করে স্বল্পমেয়াদি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও শুরু হতে পারে। তাই, এই ধরনের ট্রেডে ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করে অপেক্ষা করাই উপযুক্ত হবে, যাতে বড় মুনাফা অর্জনের সুযোগ থাকে।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার গঠন শুরু হয়েছিল, কিন্তু তা অল্প সময়েই নিস্প্রভ হয়ে পড়ে। বর্তমানে কোনোপ্রকার যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ব্রিটিশ পাউন্ড আবারও দরপতনের শিকার হচ্ছে। আগেও উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন ডলারের ক্রমাগত দর বৃদ্ধির জন্য এখন আর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। তাই আমরা মধ্যমেয়াদে কেবল এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সম্ভাবনাই দেখছি। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করার বিষয়টি এখনও ওপর নেতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, যা এখন পরিলক্ষিত অযৌক্তিক পরিস্থিতির মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সোমবার, নতুন ট্রেডাররা 1.3102-1.3107 এরিয়ার মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্যে ট্রেড করতে পারেন অথবা শুক্রবারে ওপেন করা লং পজিশনগুলো ব্রেকইভেন লেভেলে স্টপ লস সেট করে হোল্ড করে রাখতে পারেন।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য উপযোগী লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3102-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, 1.3574-1.3590, 1.3643-1.3652।
সোমবার, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক প্রকাশিত হবে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ISM সূচকের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত, কারণ এটির ফলাফল মার্কেটে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।