শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

শুক্রবারও EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের চলমান নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল, যদিও এর পেছনের কারণগুলো কিছুটা সন্দেহজনক ছিল। সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে, নতুন ট্রেডারদের জন্য একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে ইউরোজোনের মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। মনে করিয়ে দিই, ইউরোপীয় ইউনিয়নে মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন দুটি ধাপে প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে প্রথম প্রতিবেদনটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শুক্রবার, অক্টোবর মাসের প্রাথমিক (প্রথম) অনুমান প্রকাশিত হয়, যেখানে বার্ষিক ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল 2.1% — যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের সঙ্গেই সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। অর্থাৎ, প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো কোনো ফলাফল ছিল না এবং আবারও ইউরোর দরপতন শুরু হওয়ার জন্য কোনো যৌক্তিক কারণও ছিল না। পূর্বাভাস ও প্রকৃত ফলাফলের তুলনার বাইরে গিয়ে, আমরা এই বিষয়টির ওপর নজর দিতে পারি যে ইউরোপে মূল্যস্ফীতি মন্থর হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেলে সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে ইঙ্গিত দেয় যে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) "ডোভিশ" বা নমনীয় অবস্থান সম্ভবত আরও দৃঢ় হচ্ছে, এবং এর ফলে সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনা কিছুটা বেড়ে যায়। তবে, এই ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির পতন এতটাই সামান্য যে ইসিবি কেবল তখনই পদক্ষেপ নেবে যদি মুদ্রাস্ফীতির হার 2%-এর নিচে নেমে আসে। সুতরাং, শুক্রবারের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন ইসিবির আর্থিক নীতিমালায় তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। ইউরোপীয় মুদ্রা এখন শুধুই টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে দরপতনের শিকার হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, শুক্রবার সারাদিনে একটি মাত্র সেল ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, প্রায় সারাদিন ধরেই এই পেয়ারের মূল্যের কনসোলিডেশন হয়েছে। মার্কিন ট্রেডিং সেশন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এই পেয়ারের মূল্য 1.1571-1.1584 এরিয়া ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, যার ফলে শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই EUR/USD পেয়ারের মূল্য 1.1527-এর প্রথম লক্ষ্যমাত্রা নেমে আসে এবং সেই লেভেল থেকে বাউন্স করে। তাই, নতুন ট্রেডারদের জন্য মুনাফা নিশ্চিত করার দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার আবারও মার্কেটে স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বিরাজ করছে, তবে এর মাঝেও স্বল্প পরিসরে মুনাফা করা সম্ভব হয়েছে।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের আবারও দরপতন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য একটি নতুন অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়েছে এবং সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের জন্য অনুকূল নয়। তাই টেকনিক্যাল কারণে ইউরোর এই দরপতন আরও কিছুদিন বজায় থাকতে পারে। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করার বিষয়টি এখনো গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট স্ট্রাকচার যা শেষ হওয়ার পরেই নতুন করে আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার, নতুন ট্রেডাররা 1.1527 লেভেলে ট্রেড করতে পারেন। এই লেভেল থেকে বাউন্স হলে মূল্যের 1.1571-1.1584 এরিয়ার দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। তবে মূল্য এই লেভেলের নিচে মূল্য স্থিতিশীল হলে 1.1474-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970-1.1988।
সোমবার ইউরোজোন, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক প্রকাশিত হবে। এর মধ্যে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে ISM সূচকের ওপর, যেটির ফলাফলের প্রভাবে মার্কেটে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।