বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ার সবাইকে চমকে দিয়েছে। গত পাঁচ সপ্তাহ ধরে ইউরোপীয় মুদ্রা ধারাবাহিকভাবে দরপতনের শিকার হচ্ছিল, কিন্তু গতকাল এটির মূল্য অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। বিশেষ করে, সোমবার ও বুধবার ট্রেডাররা সব ধরনের সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ উপেক্ষা করেছিল, এবং গতকাল সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও মৌলিক — উভয় প্রেক্ষাপটই উপেক্ষা করেছে। যেমনটি আমরা আগেও উল্লেখ করেছি, এখন এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এবং প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলাফলের মধ্যে কোন স্পষ্ট সম্পর্ক নেই। গতকাল জার্মানির ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন বা শিল্প উৎপাদন এবং ইউরোপীয় রিটেইল সেলস বা খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে উভয় প্রতিবেদনের ফলাফলই প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল ছিল। তবে মার্কেটে এর কোনো প্রভাব পড়েনি, কারণ সারাদিনই ইউরোর মূল্য ঊর্ধ্বমুখী ছিল। যুক্তরাজ্যে, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড মূল সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে ভোটের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় বেশি "ডোভিশ বা নমনীয়" ছিল। অতীতে, এমন ফলাফল নিয়মিতভাবে পাউন্ডের দরপতনের দিকে নিয়ে যেত। কিন্তু গতকাল আমরা উল্টো দৃশ্য দেখেছি – পাউন্ডের দর বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই অনুযায়ী, এই দুটি কারেন্সি পেয়ারের মূল্যই কেবলমাত্র "নিরেট" টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে মুভমেন্ট প্রদর্শন করছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার দু'টি ট্রেড সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল; তবে একটি বাই সিগন্যাল আগেই, অর্থাৎ বুধবার সন্ধ্যায় 1.1474 লেভেলের কাছাকাছি গঠিত হয়, যেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়। সুতরাং, নতুন ট্রেডাররা বুধবারেই লং পজিশন ওপেন করতে পারত এবং শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তা হোল্ড করে রাখতে পারত, কারণ দিনের বেলায় কোনো সেল সিগন্যাল গঠিত হয়নি। দিনের শেষে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1527 লেভেল অতিক্রম করেছে, যার ফলে ট্রেডাররা শুক্রবারেও প্রফিটে স্টপ লস সেট করে লং পজিশন হোল্ড করতে পারে।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য আপট্রেন্ড লাইনটি ব্রেক করেছে, এবং সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও মার্কিন ডলারের জন্য প্রতিকূল রয়েছে। তাই শুধুমাত্র টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপটের প্রভাবেই ইউরোপীয় মুদ্রার আরও দরপতন ঘটতে পারে — দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশা করছি, এই পেয়ারের মূল্য এই ফ্ল্যাট রেঞ্জ থেকে বের হলে ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হবে।
শুক্রবার, নতুন ট্রেডাররা এই পেয়ারের মূল্যের 1.1571–1.1584-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের আশা করতে পারে, কারণ গত তিন দিনে তিনটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। যদি আজ এই পেয়ারের মূল্য 1.1527 লেভেলের নিচে স্থায়ীভাবে অবস্থান নিতে পারে, তবে শর্ট পজিশন প্রাসঙ্গিক হবে, যেখানে মূল্যের 1.1474-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নোক্ত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখুন: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই, এবং যুক্তরাষ্ট্রে শুধুমাত্র ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচক প্রকাশিত হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে, এই সপ্তাহ এবং গত এক মাস ধরে, মার্কেটের ট্রেডাররা মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন পুরোপুরিভাবে উপেক্ষা করে চলেছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।