বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারেরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে, যা বিশ্লেষণ অনুযায়ী খুব একটা যৌক্তিক নয়। মনে করিয়ে দিই, ব্রিটিশ মুদ্রা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে দরপতনের শিকার হচ্ছিল এবং ইউরোর তুলনায় আরও দ্রুতগতিতে পাউন্ডের দরপতন ঘটছিল—প্রায়শই কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই পাউন্ডের দরপতন হয়েছে। কিন্তু গতকাল, ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের পর ট্রেডারদের চমকে দিয়ে পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মূল্য বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে, তবে এই সিদ্ধান্তটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছিল না। বলা যেতে পারে, সিদ্ধান্তটি "চূড়ান্ত লড়াইয়ের" মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। আর্থিক নীতিমালা সংক্রান্ত কমিটির চারজন সদস্য সুদের হার কমানোর পক্ষে এবং পাঁচজন অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অর্থাৎ, মাত্র একটি ভোটের পার্থক্যেই ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদের হার কমিয়ে আনতে পারত। এই ঘটনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি "ডোভিশ বা নমনীয়" অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়। তাই, গতকাল পাউন্ডের আরো দরপতনের জন্য যথেষ্ট কারণ ছিল। তবে, যেমনটি আমরা আগেও বলেছি, বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের সাথে কোনো ইভেন্ট বা প্রতিবেদনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে না। এই কারণেই, ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে বিদ্যমান নিম্নমুখী প্রবণতার মাঝেও এবং দৈনিক টাইমফ্রেমে কারেকশন/ফ্ল্যাট রেঞ্জে অবস্থান করার প্রবণতার মধ্যেও আমরা এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখতে পেয়েছি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার সারাদিনে কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। যদিও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের কারণে একটু বিশৃঙ্খলভাবে এই পেয়ারের ট্রেডিং করা হয়েছে। তবে আগের রাতেই সবচেয়ে কার্যকর একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়। এই পেয়ারের মূল্য 1.3043 লেভেল ব্রেক করার পর, মার্কিন সেশনের সময় মূল্য 1.3102–1.3107 লেভেলের কাছাকাছি চলে আসে, যেখানে প্রফিট নেওয়া সম্ভব ছিল। পরবর্তী সময়ে আরও দুটি সিগন্যাল তৈরি হয়: একটি সেল সিগন্যাল (ভুল) এবং একটি বাই সিগন্যাল (সঠিক)।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নতুন একটি নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। আবারও যেকোনো কারণেই হোক পাউন্ড স্টার্লিংয়ের দরপতন হচ্ছে। যেমনটি আমরা আগেও উল্লেখ করেছি, দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ডলারের ধারাবাহিকভাবে মূল্য বৃদ্ধির পক্ষে কোনো স্পষ্ট ভিত্তি নেই, তাই মধ্যমেয়াদে আমরা মূলত এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশাই করছি। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করার প্রবণতা মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা সৃষ্টি করে চলেছে, যা একেবারেই অযৌক্তিক।
শুক্রবার, নতুন ট্রেডাররা এই পেয়ারের মূল্য 1.3102–1.3107 জোন ব্রেক করার পর বাই পজিশন ওপেন করতে পারে, যেখান থেকে মূল্যের 1.3203 লেভেল পর্যন্ত যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি আজ এই পেয়ারের মূল্য সফলভাবে 1.3102–1.3107 এরিয়ার নিচে অবস্থান গ্রহণ করে, তাহলে শর্ট পজিশন প্রাসঙ্গিক হবে, এই পেয়ারের মূল্যের 1.3043-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543 এবং 1.3574–1.3590।
শুক্রবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই। আর যুক্তরাষ্ট্রে শুধুমাত্র কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচক প্রকাশিত হবে—নন-ফার্ম পেরোল ও বেকারত্বের হার সংক্রান্ত প্রতিবেদন নয়।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।