শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

শুক্রবার মূলত সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং করা হয়েছে। সেদিন তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। মূলত একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে ইউরোজোনের জিডিপি প্রকাশিত হয়েছে, যেটির ফলাফল ট্রেডারদের সন্তুষ্ট করেনি, আবার হতাশও করেনি। ট্রেডাররা এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের অভাব বোধ করছেন। মাঝে মাঝে দেশটিতে কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, কিন্তু সেগুলো খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। "শাটডাউন"-এর কারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলো এখনও প্রকাশ করা হয়নি। গত সপ্তাহে মার্কিন সরকার এবং ফেডারেল প্রতিষ্ঠানগুলো আবার কার্যক্রম শুরু করেছে; তবে তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণে এখনও যথেষ্ট সময় লাগবে। উদাহরণস্বরূপ, এই সপ্তাহে প্রকাশিতব্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা মূল প্রতিবেদন নেই। মূল ভিত্তিগত কারণগুলো এখনও এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে, অথচ মার্কেটের ট্রেডাররা স্থানীয় কারণগুলো উপেক্ষা করছে। যেমন, গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আনুষ্ঠানিকভাবে "শাটডাউন" শেষ হওয়া সত্ত্বেও তা ডলারকে তেমন কোনো সহায়তা দিতে পারেনি। এর আগে যখন মার্কিন সরকারি কার্যক্রম বন্ধ ছিল তখন দেড় মাস ধরে ডলারের দর বেশ ভালোই বৃদ্ধি পেয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

শুক্রবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে সারাদিনে মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। মার্কিন ট্রেডিং সেশনের শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1655 লেভেল থেকে বাউন্স করে প্রায় ৩০ পিপস কমে যায়, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য একটি সহজ সিগন্যাল কাজে লাগিয়ে মুনাফা করার সুযোগ দেয়। সার্বিকভাবে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা প্রায় ৫০ পিপস হলে, ৩০-পিপসের মুনাফা বেশ চমৎকার ফলাফল হিসেবে গণ্য করা যায়।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, স্থানীয় পর্যায়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে, যার ফলে এই পেয়ারের মূল্য ১৫০-২০০ পিপস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। মার্কিন ডলারের জন্য সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও বেশ নেতিবাচক। ফলে, শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কাঠামোর ভিত্তিতে ইউরোর দরপতন হতে পারে – দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জে অবস্থান করার প্রবণতা এখনো প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছে। তবে, আমরা আশা করছি এই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে চলমান মুভমেন্ট শীঘ্রই শেষ হবে এবং ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আবার শুরু হবে, এমনকি ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যেও কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
সোমবার, নতুন ট্রেডাররা 1.1571–1.1584 এরিয়াতে ট্রেড করতে পারেন। এই এরিয়া থেকে এই পেয়ারের মূল্য বাউন্স করলে মূল্যের 1.1655-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.1571–1.1584-এর নিচে স্থিতিশীলভাবে কনসোলিডেট করে, তবে শর্ট পজিশন প্রাসঙ্গিক হবে, যেখানে মূল্যের 1.1534-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জনয় নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527–1.1531, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। সোমবার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র—কোনো দিক থেকেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্টও নির্ধারিত নেই। তাই, আজ এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট এবং স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।