মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য সম্পূর্ণ স্থবির অবস্থায় ছিল। সারাদিন ধরে এই পেয়ারের মূল্যের সামগ্রিক ভোলাটিলিটি ৪০ পিপসের নিচেই থেকে গেছে, এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি কিংবা ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টও নির্ধারিত ছিল না। তাই মার্কেটের গতকালকের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্লেষণ করার মতো তেমন কিছুই নেই। এখন শুধু আশা করা যায় যে অন্তত আগামীকাল থেকে মার্কেট কিছুটা হলেও সক্রিয় হবে এবং স্বল্পমেয়াদে কিছু মুভমেন্ট শুরু হতে পারে। মনে রাখা দরকার, দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের এখনো ফ্ল্যাট মুভমেন্ট বজায় রয়েছে এবং কেউ পছন্দ করুক আর না করুক, এই ফ্ল্যাট রেঞ্জ গত এক মাস ধরে মার্কেটে তেমন কোনো গতি সৃষ্টি করতে পারেনি। এমনকি ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমেও কার্যত কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে না। তাছাড়া, বৃহস্পতিবার থেকে নতুন কোনো প্রবণতাভিত্তিক মুভমেন্ট শুরু হবে—এমন কোনো নিশ্চয়তা এখনো নেই। গত দুই মাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু মার্কেটের ট্রেডাররা বেশিরভাগ সময়ই সেগুলোর প্রতি উদাসীন থেকেছে এবং অনেক সময় অযৌক্তিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেড় মাসব্যাপী চলা "শাটডাউনের" বিষয়টি মার্কেটের ট্রেডাররা কার্যত উপেক্ষা করেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

মঙ্গলবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে একটি মাত্র ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। মার্কিন ট্রেডিং সেশনের শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1584 লেভেলে পৌঁছে সেখান থেকে বাউন্স করে। সার্বিকভাবে এই পেয়ারের মূল্য প্রায় ১৫–২০ পিপস পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়, এবং নতুন ট্রেডাররা সহজেই এই পরিমাণ মুনাফা অর্জন করতে পারতেন। আজ আবারও এই পেয়ারের মূল্য 1.1584 লেভেল বা পুরো 1.1571–1.1584 এরিয়া থেকে বাউন্স করে ২০–৩০ পিপস ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেম অনুযায়ী, স্থানীয় পর্যায়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে, যার ফলে সামগ্রিকভাবে এই পেয়ারের মূল্য ১৫০–২০০ পিপস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে পারে। মার্কিন ডলারের জন্য এখনো সামগ্রিকভাবে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বেশ নেতিবাচক রয়েছে। তাই, শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারণের ভিত্তিতেই ইউরোর দরপতন হতে পারে, কারণ দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করার প্রবণতা এখনও পুরোপুরিভাবে প্রাসঙ্গিক রয়েছে। যদিও আমরা আশা করছি এই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে মুভমেন্ট শেষ হবে এবং ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আবার শুরু হবে। এমনকি ফ্ল্যাট রেঞ্জের ভেতরেও কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
বুধবার, নতুন ট্রেডাররা 1.1571–1.1584 এরিয়া থেকে ট্রেড করার সুযোগ খুঁজতে পারেন। এই এরিয়া থেকে আরেকটি বাউন্স হলে মূল্যের 1.1655-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। আর যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার নিচে স্থিতিশীলভাবে কনসোলিডেট করে, তখন শর্ট পজিশনের কথা ভাবা যেতে পারে, যেখানে মূল্যের 1.1534-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী, ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970-1.1988। বুধবার ইউরোপে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে, যদিও এই প্রতিবেদনের গুরুত্ব খুবই সীমিত। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডের সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশিত হবে, তবে ট্রেডারদের কাছে এটিও খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।