বুধবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বৃহস্পতিবার দিনের দ্বিতীয়ার্ধে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের তীব্র দরপতন ঘটেছে। প্রথম যে প্রশ্নটি মনে আসে তা হলো: কেন? চলুন অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারের দিকে নজর দিই। সকালে ইউরোজোনে অক্টোবরের মুদ্রাস্ফীতির দ্বিতীয় প্রাক্কলন প্রকাশিত হয়, যা প্রথম প্রাক্কলন এবং পূর্বাভাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। সন্ধ্যায় ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশিত হয়, যেটি দীর্ঘদিন ধরেই কেবল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দুটি প্রতিবেদন প্রকাশের মাঝামাঝি সময়ে স্পষ্টভাবে মার্কিন ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এবং এই পেয়ারের দরপতন শুরু হয়। সহজভাবে বললে, মার্কিন ট্রেডিং সেশন শুরু হওয়ার পরই ডলারের দর বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, ইউরোজোনের মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন কিংবা কার্যবিবরণী প্রকাশের পর নয়। তাই আবারও দেখা যাচ্ছে যে, এই পেয়ারের মূল্যের এই ধরণের মুভমেন্টকে কোনো একক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করা যাচ্ছে না। মার্কিন ডলারের দর হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, এমন একটি সময়ে যখন এটির দরপতন হওয়াই বেশি যৌক্তিক ছিল। দৈনিক টাইমফ্রেমে ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট চলমান রয়েছে, যার ফলে লোয়ার টাইমফ্রেমে অযৌক্তিক মুভমেন্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

সাধারণভাবে বললে, গতকাল আমরা নতুন বা চমকপ্রদ কিছু দেখিনি। ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1584 লেভেল থেকে বাউন্স করার ইঙ্গিত দেয়, কিন্তু এরপর মূল্য 10 পিপসও বৃদ্ধি পায়নি। পরে, 1.1571-1.1584 এরিয়া থেকে একটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়, যা সঠিক বলে প্রমাণিত হয়। এর ফলে শর্ট পজিশন ওপেন করে প্রায় 35 পিপস লাভ করা সম্ভব হয়েছে। সারাদিন ধরে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা বেশ কম ছিল।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের পুনরায় দরপতন হচ্ছে এবং সম্ভবত একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। মার্কিন ডলারের জন্য সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বেশ নেতিবাচক রয়ে গেছে, তাই এখনও মূলত টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপটের কারণে ইউরো দরপতন ঘটতে পারে, দৈনিক টাইমফ্রেমে দৃশ্যমান ফ্ল্যাট রেঞ্জ এখনও প্রাসঙ্গিক রয়েছে। তবে আমরা আশা করছি যে এই ফ্ল্যাট মুভমেন্ট শীঘ্রই শেষ হবে এবং 2025 সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আবার শুরু হবে, যদিও এই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যেও কিছুটা উর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার, নতুন ট্রেডাররা 1.1527-1.1531 এরিয়া থেকে ট্রেডিং শুরু করতে পারেন। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার ওপর কনসোলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.1571-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং ট্রেড ওপেন করা যেতে পারে। অন্যথায়, যদি মূল্য 1.1571-1.1584 এরিয়ার নিচে কনসোলিডেট করে, তাহলে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে, যেক্ষেত্রে মূল্যের 1.1474-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় নেয়া উচিত: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970-1.1988।
বৃহস্পতিবার, ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ননফার্ম পেরোল এবং বেকারত্বের হার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে—যেগুলোর জন্য ট্রেডাররা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে। তাই দিনের দ্বিতীয়ার্ধে এই পেয়ারের মূল্যের উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট শুরু হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।