বুধবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বুধবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারেরও দরপতন ঘটেছে। স্বীকার করতে হবে যে, ব্রিটিশ পাউন্ডের এই নতুন দরপতনের পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে, কারণ যুক্তরাজ্য থেকে একের পর এক প্রতিবেদনের নেতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। গত সপ্তাহে জানা গেছে যে বেকারত্বের হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, শিল্প উৎপাদনের পতন ঘটেছে এবং দেশটির জিডিপিও কমেছে। এর পাশাপাশি, গতকাল ঘোষণা করা হয়েছে যে যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার কমে ৩.৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সুদের হার কমানোর জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে। অতএব, বৈশ্বিক মৌলিক প্রেক্ষাপট মার্কিন ডলারের জন্য এখনও নেতিবাচকই রয়ে গেছে, তবে স্থানীয় প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ পাউন্ড বারবার দরপতনের সম্মুখীন হচ্ছে। ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এই পেয়ারের মূল্য ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলেও, আমরা এখনও কোনো পূর্ণাঙ্গ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখিনি। তবে এই পরিস্থিতি গত কয়েক মাস ধরেই অব্যাহত রয়েছে। আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নন-ফার্ম পেরোলস এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যেগুলোর ফলাফল ক্ষেত্রবিশেষে এই পেয়ারের আরও ১০০ পিপস পর্যন্ত দরপতন ঘটাতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। শুরুতে, মূল্য 1.3096-1.3107 এরিয়া থেকে বাউন্স করার চেষ্টা করে, কিন্তু এরপর তা ১৫ পিপসও বৃদ্ধি পায়নি। পরে, এই এরিয়াটি ব্রেক করে এই পেয়ারের মূল্য 1.3043-এ পৌঁছে যায়, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য প্রায় ৩০-৪০ পিপস লাভের সুযোগ তৈরি করে। অবশেষে, 1.3043-এ একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়, কিন্তু এটি অনেক দেরিতে প্রায় রাতের দিকে গঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে দেখা যাচ্ছে যে GBP/USD পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে এবং আবারও দরপতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকেও এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট খুব একটা যৌক্তিক নয়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রাখার জন্য কোনো বৈশ্বিক ভিত্তি নেই। তাই মধ্যমেয়াদে আমরা কেবল এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতারই প্রত্যাশা করছি। তবে দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান কারেকশন/ফ্ল্যাট মুভমেন্ট এখনো শেষ হয়নি এবং স্থানীয় সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ব্রিটিশ পাউন্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বৃহস্পতিবার, নতুন ট্রেডারদের 1.3043 লেভেল থেকে নতুন ট্রেডিং সিগনালের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। যদি এই লেভেল থেকে মূল্য বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.3096-1.3107-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য এই লেভেলের নিচে কনসোলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.2993-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন প্রাসঙ্গিক হবে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে নিম্নলিখিত লেভেলগুলোতে ট্রেডিং করা যেতে পারে: 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, এবং 1.3574-1.3590।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমবাজার এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তাই দিনের দ্বিতীয়ার্ধে এই পেয়ারের মূল্যের উল্লেখযোগ্য ও শক্তিশালী মুভমেন্ট দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।