বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, তবে মূল্যের ভোলাটিলিটির মাত্রা অত্যন্ত স্বল্প ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তাতে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য কোনো মুভমেন্ট দেখা যায়নি। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য 1.3043 থেকে 1.3107 পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে এখন একটি নতুন ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন গঠিত হয়েছে, যেটি ব্রেক না করা পর্যন্ত ভবিষ্যতে পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা সীমিতই থাকবে। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, ননফার্ম পেরোল এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও, গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল থেকে ফেডারেল রিজার্ভের বছরের শেষ বৈঠক বা সুদের হারের বিষয়ে কোনো দৃঢ় সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। সে হিসেবে এগুলো কার্যত অর্থহীন। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য বর্তমানে আবারো একটি স্থানীয় "বটমে" অবস্থান করছে এবং আবারও "এখান থেকে বৃদ্ধি পাওয়ার" চেষ্টা করবে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যা বেশ অপ্রত্যাশিত ছিল। দিনের শুরুতেই প্রথম সিগন্যালটি গঠিত হয়, যখন এই পেয়ারের মূল্য দুইবার 1.3043 লেভেল থেকে বাউন্স করে—যা আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছিলাম। পরবর্তী সময়ে (মার্কিন অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের কিছুটা সহায়তায়) এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পায় এবং কার্যকরভাবে 1.3096-1.3107 এরিয়ার দিকে যায়। সেই মুহূর্তে লং পজিশন ক্লোজ করে মুনাফা নেওয়া যেত। 1.3096-1.3107 এরিয়াতে গঠিত সেল সিগন্যাল কাজে লাগিয়ে ট্রেড করা উচিত কি না, তা একটি উন্মুক্ত প্রশ্ন হলেও, এই ট্রেড করলেও কোনো লোকসানের সম্মুখীন হতে হতো না।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের আবারও একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, সাম্প্রতিক সময়ে এমনকি টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকেও এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট খুব একটা যৌক্তিক নয়। আমরা আগেই বলেছি, ডলারের মূল্যের দীর্ঘমেয়াদি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য কোনো বৈশ্বিক ভিত্তি নেই, তাই মধ্যমেয়াদে আমরা কেবল ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতারই প্রত্যাশা করছি। তবে দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান কারেকশন/ফ্ল্যাট মুভমেন্ট এখনো শেষ হয়নি এবং স্থানীয় মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ব্রিটিশ পাউন্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
শুক্রবার, নতুন ট্রেডাররা 1.3096-1.3107 এরিয়ার মধ্যে নতুন ট্রেডিং সিগন্যালের প্রত্যাশা করতে পারেন। যদি এই এরিয়া থেকে এই পেয়ারের মূল্য বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.3043-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্য এই এরিয়ার ওপরে কনসোলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.3203-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, এবং 1.3574-1.3590।
শুক্রবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বর মাসের সেবাখাত ও উৎপাদনখাত ভিত্তিক বিজনেস অ্যাক্টিভিটি সূচক প্রকাশিত হবে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের কথা না থাকায় এই প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কেটে কিছুটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। যেহেতু সামগ্রিকভাবে মার্কেটে দুর্বল মাত্রার ভোলাটিলিটি বিরাজ করছে, তাই শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার পরিবর্তে হালকা মুভমেন্টেরই প্রত্যাশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যে রিটেইল সেলস বা খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোক্তা আস্থা সূচক প্রকাশিত হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।