সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের পর্যালোচনা:

শুক্রবার বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরিষেবা ও উৎপাদন খাতভিত্তিক বিজনেস অ্যাক্টিভিটি সূচক (PMI) প্রকাশিত হবে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আজ যে প্রাথমিক মূল্যায়নগুলো প্রকাশিত হবে, সেগুলো মার্কেটে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের সূচকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ISM বিজনেস অ্যাক্টিভিটি ইনডেক্স। এছাড়াও আজ যুক্তরাজ্যে রিটেইল সেলস বা খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা আস্থা সূচক প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলোর প্রভাব মাঝারি মানের হলেও, মার্কেটে কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:

শুক্রবার আবারও একাধিক ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নির্ধারিত রয়েছে। আজ মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধির বক্তব্য প্রদান করবেন—যাদের মধ্যে রয়েছেন বার, জেফারসন, উইলিয়ামস, কলিন্স এবং লোগান। তবে সুদের হার নিয়ে ফেডের আর্থিক নীতিনির্ধারণী কমিটির অবস্থান সম্পর্কে আমরা ইতোমধ্যেই ধারণা পেয়েছি। এই অবস্থান অনুযায়ী, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিসেম্বরে মূল সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে চায়, তবে নভেম্বর মাসের শ্রমবাজার, বেকারত্বের হার ও মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশের পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । তাই ১০ ডিসেম্বর ফেড কী সিদ্ধান্ত নিতে পারে সে বিষয়ে কেবলমাত্র ডিসেম্বরের শুরুতেই যেকোনো পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব। আজ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডে একটি বক্তব্য প্রদান করবেন, তবে লাগার্ডের বক্তব্যের প্রতি মার্কেটে তেমন কোনো আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের যেকোনো ধরনের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কারণ আজকের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট মার্কেটে বেশ ভালোই প্রভাব বিস্তার করবে। EUR/USD পেয়ারের জন্য 1.1527-1.1531 এরিয়া একটি শক্তিশালী ট্রেডিং জোন হিসেবে রয়ে গেছে। অন্যদিকে, ব্রিটিশ পাউন্ড 1.3096-1.3107 এরিয়ার আশপাশে ট্রেড করছে। তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের সংখ্যা কিংবা তাৎপর্য যতই বেশি হোক না কেন, বর্তমানে মার্কেটে স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বিরাজ করছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।