শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

গত সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য আবারও নিম্নমুখী হয়েছে। এর পেছনে কি কোনো যৌক্তিক কারণ ছিল? শুক্রবার বেশ কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তবে প্রায় সবগুলো প্রতিবেদনের ফলাফল একে অপরের সাথে পরস্পরবিরোধী ছিল। ইউরোজোনে প্রকাশিত দুটি বিজনেস অ্যাক্টিভিটি ইনডেক্স সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল সম্পূর্ণভাবে বিপরীতমুখী ছিল, আর একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস অ্যাক্টিভিটি ইনডেক্স সংক্রান্ত প্রতিবেদন একে অপরের সাথে সাংঘর্ষিক ফলাফল প্রদর্শন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচকের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল ছিল (যার ফলে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট বজায় রাখা সম্ভব হয়নি), এবং জার্মানির উভয় বিজনেস অ্যাক্টিভিটি ইনডেক্সের বড় ধরনের পতন দেখা গিয়েছে। সম্ভবত এসব বিষয়ে দিনের প্রথমার্ধে ইউরোর দরপতনে অবদান রেখেছে। সামগ্রিকভাবে, মার্কিন ডলারের দর আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বৃদ্ধি প্রদর্শন করছে, বিশেষ করে মার্কেটে ক্রমবর্ধমান চলতি বছরের শেষ বৈঠকে ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক "ডোভিশ বা নমনীয়" অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তে থাকা বেকারত্বের প্রেক্ষাপটে। দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জে অবস্থান করার প্রবণতা এখনও অব্যাহত রয়েছে, তাই তাত্ত্বিকভাবে এই পেয়ারের মূল্য 1.1400 লেভেল পর্যন্ত কমে যেতে পারে, যার ওপর অবস্থান করায় ফ্ল্যাট রেঞ্জ এখনও প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছে। তবে আমাদের পূর্বানুমান অনুযায়ী এই সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যেই এই পেয়ারের মূল্য অন্তত 1.1800 পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে প্রত্যাশা করছি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনে 1.1527-1.1531 এরিয়াতে একটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয় এবং মার্কিন সেশনে একই ধরণের আরেকটি সিগন্যাল গঠিত হয়। উভয় ক্ষেত্রেই এই পেয়ারের ১৫-২০ পিপস দরপতন হয়েছিল। রাতে একটি বাই সিগন্যালও গঠিত হয়েছিল, তবে সেটি থেকেও উল্লেখযোগ্য মুনাফা পাওয়া যায়নি। মূল সমস্যা হলো—মার্কেটে এখনও দুর্বল মুভমেন্ট বিরাজ করছে।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য আবারও কমে যাচ্ছে এবং সম্ভবত একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। মার্কিন ডলারের জন্য সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও বেশ নেতিবাচক, তাই মূলত কেবল টেকনিক্যাল কারণেই ইউরোর দরপতন হচ্ছে—দৈনিক টাইমফ্রেমের ফ্ল্যাট রেঞ্জ এখনও প্রাসঙ্গিক রয়েছে। তবে আমরা এই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের সমাপ্তি এবং 2025 সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পুনরায় শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি। এর মধ্যে, ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যেও মাঝেমধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট ঘটতে পারে।
সোমবার, নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1527-1.1531 এরিয়া থেকে ট্রেডিং শুরু করতে পারেন। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার ওপরে কনসোলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.1571-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। তবে, যদি মূল্য এই এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.1474-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, এবং 1.1970-1.1988।
সোমবার ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডে একটি বক্তব্য দেবেন এবং জার্মানির Ifo ইনস্টিটিউটের বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তবে আমরা এগুলোকে স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন হিসেবে বিবেচনায় নিচ্ছি। তাই আজও এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা কম থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।