শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

শুক্রবার একটি নতুন সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে GBP/USD পেয়ারের ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। মনে করিয়ে দিই, এই পেয়ারের মূল্য দুই সপ্তাহ ধরে 1.3107-1.3203 চ্যানেলে অবস্থান করেছিল এবং এরপর এর নিচে নেমে গিয়ে নতুন করে 1.3043-1.3107 চ্যানেলে আটকে পড়ে। একইসঙ্গে, একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতাও গঠিত হয়েছে, যা ট্রেন্ডলাইন দ্বারা স্পষ্টভাবে নির্দেশিত হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, মার্কেটে খুব একটা আকর্ষণীয় মুভমেন্ট না দেখা গেলেও, ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে মুভমেন্টের মধ্যে মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। উপরের চার্ট অনুযায়ী, গত দুই দিনের ট্রেডিংয়ে এই পেয়ারের মূল্য চারবার এই নতুন ফ্ল্যাট রেঞ্জের সীমানা থেকে বাউন্স করেছে। প্রতিটি সুযোগেই ট্রেডাররা মূল্যের এই রিবাউন্ডকে কাজে লাগিয়ে ট্রেড ওপেন করার সম্ভাবনা পেয়েছেন।সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিক থেকে ব্রিটিশ অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল আবারও প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও বিজনেস অ্যাক্টিভিটি বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংক্রান্ত সূচকগুলোর মোটামুটি সন্তোষজনক ফলাফল দেখা গিয়েছে, তবে অক্টোবর মাসে দেশটির খুচরা বিক্রয় ১.১% হ্রাস পেয়েছে। ফলে দিনের প্রথমার্ধে পরিলক্ষিত ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন মোটামুটি যৌক্তিক ছিল। দিনের দ্বিতীয়ার্ধে মার্কিন মুদ্রার দরপতনের পেছনে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচকের ফলাফল প্রভাব ফেলেছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

শুক্রবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের সময়, এই পেয়ারের মূল্য 1.3096-1.3107 রেঞ্জ থেকে দুইবার বাউন্স করে, যা নতুন ট্রেডারদের শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ দেয়। মার্কিন সেশনের শুরুতে 1.3043 লেভেলের কাছাকাছি একটি বাই সিগন্যাল তৈরি হয় এবং কিছুক্ষণ পর ফের 1.3096-1.3107 এরিয়া থেকে আরেকবার মূল্যের বাউন্স হতে দেখা যায়। সেই অনুযায়ী, নতুন ট্রেডাররা তিনটি ট্রেড ওপেন করতে পারতেন, যার মধ্যে দুটি ট্রেডে বেশ ভালো লাভ হতো এবং একটি ট্রেড ব্রেকইভেনে ক্লোজ হতো।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে দেখা যাচ্ছে যে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এমনকি টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকেও এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে পুরোপুরি যৌক্তিক বলা যাচ্ছে না। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, দীর্ঘমেয়াদে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা জন্য বৈশ্বিক পর্যায়ে কোনো কারণ নেই বললেই চলে, তাই আমাদের দৃষ্টিতে মধ্যমেয়াদে কেবল এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাই প্রত্যাশিত। যদিও দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান কারেকশন/ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখনো শেষ হয়নি এবং স্থানীয় সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ব্রিটিশ পাউন্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে।
সোমবার, নতুন ট্রেডাররা 1.3096-1.3107 এরিয়াতে নতুন ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হওয়ার প্রত্যাশা করতে পারেন। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.3043-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্য এই এরিয়ার ওপরে কনসোলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.3203-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো পর্যবেক্ষণ করা উচিত: 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, এবং 1.3574-1.3590।
সোমবার, যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই সারাদিন জুড়েই এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এবং স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা বজায় থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।