সোমবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

সোমবার পুনরায় EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছিল, কিন্তু ফলাফল হিসেবে আরেকবার আমরা মার্কেটে স্থবির অবস্থা দেখতে পেয়েছি। যেমনটা আমরা দেখতে পাচ্ছি, মার্কেটে হয় কোনো মুভমেন্ট হয় না নয়তো অযৌক্তিক মুভমেন্ট দেখা যায়। সোমবার কার্যত ট্রেডিং করার কোনো অবস্থা ছিল না। দিনজুড়ে সামগ্রিক ভোলাটিলিটির মাত্রা ছিল ৫০ পিপসের নিচে, এবং এই পেয়ারের মূল্য শুক্রবারের প্রতিষ্ঠিত রেঞ্জের মধ্যেই স্থির ছিল। সামষ্টিক অর্থনীতি প্রেক্ষাপট প্রায় অনুপস্থিত ছিল, জার্মানিতে ব্যবসায়িক আস্থা সূচক প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু সেটিও এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে কোনো প্রভাব ফেলেনি। মৌলিকভাবে বিশ্লেষণেরও কিছু ছিল না। এদিকে, দৈনিক টাইমফ্রেমে মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করার প্রবণতা বজায় রয়েছে। এমনটি গত কয়েক মাস ধরেই চলছে, এবং বর্তমানে শিগগিরই এই পরিস্থিতি অবসানের কোনো লক্ষণ নেই। ফলে মার্কেটে দুর্বল ও অযৌক্তিক মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত, ফ্ল্যাট মার্কেটের বাস্তবচিত্র এটাই। বর্তমানে এই ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট শুধুমাত্র স্থানীয় নয়, বরং বৈশ্বিক পর্যায়েও দেখা যাচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে সোমবার দিনব্যাপী কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল; তবে যৌক্তিক কারণে ট্রেডাররা উল্লেখযোগ্য লাভ অর্জন করতে পারনি। শুরুতে এই পেয়ারের মূল্য 1.1527-1.1531 লেভেল এরিয়া থেকে বাউন্স করেছিল, পরে এটি ব্রেক করে যায় এবং পরবর্তীতে বিপরীত দিক থেকেও আবার ব্রেক করে। প্রতিটি ক্ষেত্রে, মূল্য সর্বাধিক প্রায় ১৫ পিপস সঠিক দিক বরাবর অগ্রসর হয়েছিল। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, সমস্যা ট্রেডিং সিগন্যাল বা লেভেলগুলোতে নয়, বরং মার্কেটে সক্রিয় মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের আবারও দরপতন হচ্ছে এবং সম্ভবত একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। মার্কিন ডলারের জন্য সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও বেশ নেতিবাচক রয়ে গেছে, তাই মূলত কেবল টেকনিক্যাল কারণেই ইউরোর দরপতন হচ্ছে—দৈনিক টাইমফ্রেমের ফ্ল্যাট রেঞ্জ এখনও প্রাসঙ্গিক রয়েছে। তবে আমরা এই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের সমাপ্তি এবং 2025 সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পুনরায় শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি। এর মধ্যে, ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যেও মাঝেমধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট ঘটতে পারে।
মঙ্গলবার নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1527-1.1531 এরিয়া থেকে ট্রেড করতে পারেন, কারণ অন্য কোনো কার্যকর বিকল্প আপাতত নেই। যদি এই এরিয়ার উপরে এই পেয়ারের মূল্যের কনসলিডেশন হয়, তাহলে মূল্যের 1.1571-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্য এই এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তবে মূল্যের 1.1474-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন কার্যকর হয়ে উঠবে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নোক্ত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908 এবং 1.1970-1.1988। মঙ্গলবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি তুলনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে—উৎপাদন মূল্য সূচক (PPI), খুচরা বিক্রয় এবং ADP (সাপ্তাহিক) শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদন। যদিও এই প্রতিবেদনগুলোর গুরুত্ব সর্বোচ্চ নয়, তবে বর্তমানে এর বাইরে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন নেই। আমরা অনুমান করছি, এই প্রতিবেদনগুলোর প্রভাবে মার্কেটে সংযত প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।