সোমবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

সোমবার কার্যত GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের কোনো ট্রেডিং হতে দেখা যায়নি। অবশ্য বাস্তবে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তবে যদি মার্কেটে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের মুভমেন্টের দিক থেকে বিবেচনা করি, তাহলে দেখা যাচ্ছে যেকোনো টাইমফ্রেমেই কার্যকর মুভমেন্টের অভাব ছিল যা স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। সুতরাং, গতকালের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করার মতো কোনো বাস্তব উপাদান নেই। আমরা চাইলে বিভিন্ন কর্মকর্তার বক্তব্য বা ভূ-রাজনৈতিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে বিশ্লেষণ লিখতে পারি, কিন্তু মার্কেটের ট্রেডারা যদি এসব তথ্য উপেক্ষা করে এবং কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখায়— তাহলে সেটা করার কোনো মানে হয় না। সামগ্রিকভাবে, টানা তিন দিন ধরে একটানা একটি নতুন সাইডওয়েজ বা রেঞ্জবাউন্ড চ্যানেলের মধ্যে ব্রিটিশ পাউন্ডের ট্রেড করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে সেই রেঞ্জটি হলো 1.3043 থেকে 1.3107 পর্যন্ত। এই পেয়ারের মূল্য আরেকটি ডিসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইন ব্রেক করেছে, তবে আমরা এই রকম ঘটনা গত কয়েক মাসে প্রায় পাঁচবার দেখে ফেলেছি। প্রতিবারই দেখা গেছে, মার্কেটে এই পেয়ারের অতিরিক্ত ক্রয় করার মতো কোনো শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি হয়নি। সোমবার কোনো ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, এবং পুরো সপ্তাহ জুড়েই মৌলিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব খুব সীমিত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সুতরাং, মার্কেটে ভোলাটিলিটি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, সোমবার এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের ধরন বেশ স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। 1.3096-1.3107 এরিয়া, যা বর্তমান সাইডওয়েজ চ্যানেলের উপরের সীমা হিসেবে কাজ করছে, সেখানে একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত করেছিল। তবে, আমরা যেমনটি দেখেছি, মূল্য এই লেভেল থেকে বাউন্সও করেনি, এবং তা ব্রেকও করেনি। অর্থাৎ, সোমবার আমরা একটি রেঞ্জের ভেতর আবার আরও একটি রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট দেখতে পেয়েছি — যা একপ্রকার ডাবল রেঞ্জ কন্ডিশন বলা যায়।
মঙ্গলবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের আরেকটি নিম্নমুখী প্রবণতা সম্পন্ন করার প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে, তবে বর্তমানে এই পেয়ার আবারও নতুন একটি রেঞ্জের মধ্যে ট্রেড করছে। আমরা বারবার লক্ষ্য করছি, সাম্প্রতিক সময়ে টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকেও এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট খুব একটা যৌক্তিক বা স্পষ্ট নয়। আমরা আগেই বলেছি, আন্তর্জাতিকভাবে দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ডলারের শক্তিশালী হওয়ার জন্য কোনো দৃঢ় ভিত্তি নেই। ফলে, মধ্যমেয়াদে আমরা কেবল এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশাই করছি। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমের কারেকশন বা রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখনো শেষ হয়নি, এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়মিতভাবে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যকে প্রভাবিত করছে।
মঙ্গলবার, নতুন ট্রেডাররা 1.3096-1.3107 এরিয়া থেকে নতুন ট্রেডিং সিগন্যাল গঠনের প্রত্যাশা করতে পারেন। যদি মূল্য এই এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.3043-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্য এই এরিয়ার উপর কনসলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.3203-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বর্তমানে নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা যেতে পারে: 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, এবং 1.3574-1.3590। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে—উৎপাদন মূল্য সূচক (PPI), ADP (সাপ্তাহিক শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদন), এবং খুচরা বিক্রয়। এই প্রতিবেদনগুলোর প্রভাবে মার্কেটে সীমিত মাত্রায় ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।