মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার অবশেষে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য যৌক্তিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে। এবং এই মুভমেন্ট সবদিক থেকেই যুক্তিযুক্ত ছিল। শুরু করা যাক টেকনিক্যাল দিক থেকে। এই পেয়ারের মূল্য একটি ডিসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইনের ব্রেকআউট ঘটিয়েছে এবং সেটি সফলভাবে অতিক্রম করেছে—ফলে, ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রত্যাশিতই ছিল। দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য সাইডওয়েজ চ্যানেলের নিচের সীমা 1.1400-1.1830-এর কাছাকাছি পৌঁছেছিল, তাই আবারও মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়। সামষ্টিক অর্থনৈতিক দিক থেকে, গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে দুটির ফলাফল স্পষ্টভাবে মার্কিন ডলারের জন্য নেতিবাচক ছিল। উৎপাদক মূল্য সূচকের (PPI) ফলাফল নিরপেক্ষ ছিল, তবে খুচরা বিক্রয় এবং ADP কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে খারাপ আসে। ফলস্বরূপ, দিনের দ্বিতীয়ার্ধে আমরা যৌক্তিকভাবে এই পেয়ারের মূল্যের পরিপূর্ণ ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখতে পাই। আমাদের ধারণা এই পরিস্থিতি আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে, কারণ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এখনও ডলারের জন্য স্পষ্টভাবে নেতিবাচক। উপরন্তু, দৈনিক টাইমফ্রেমে পূর্বাভাসকৃত ২০২৫ সালের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার মোট পাঁচটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য নিচের দিক থেকে 1.1527-1.1531 লেভেল থেকে বাউন্স করে, তবে এই সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হয়; কারণ এই পেয়ারের মূল্য নির্ধারিত দিকে মাত্র ১০ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করে। এরপরে, একই এরিয়ার আশেপাশে দুটি একইধরনের বাই সিগন্যাল গঠিত হয়, যার ভিত্তিতে লং পজিশন ওপেন করা সম্ভব ছিল। কয়েক ঘণ্টা পর মূল্য 1.1571-1.1584 রেঞ্জে পৌঁছে যায় এবং সেখান থেকে আবার বাউন্স করে। ফলে, লং পজিশন ক্লোজ করার সুযোগ ছিল, তবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে রাতেরবেলা শর্ট পজিশন ওপেন করা সম্ভবত যৌক্তিক ছিল না।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে আবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছে। সামগ্রিকভাবে মার্কিন ডলারের জন্য মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও বেশ নেতিবাচক, ফলে কেবলমাত্র টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকেই ইউরোর দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে—দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য এখনও সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা হলো, মূল্য এই রেঞ্জ বেরিয়ে আসবে এবং ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় সক্রিয় হবে, যেখানে ফ্ল্যাট রেঞ্জের ভেতরেও মাঝেমধ্যে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যাবে।
বুধবার, নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1571-1.1584 এরিয়া থেকে ট্রেড করা শুরু করতে পারেন। যদি মূল্য এই এরিয়ার উপরে কনসলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.1655-1.1666-এর লেভেলের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নতুন লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে যেতে পারে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশি প্রাসঙ্গিক । অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার নিচে কনসলিডেট করে, তাহলে মূল্যের1.1531-এর লেভেল পর্যন্ত যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন যুক্তিযুক্ত হবে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেল হলো: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970-1.1988।
বুধবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে টেকসই পণ্যের অর্ডার সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন এবং এটির ফলাফলের প্রভাবে ট্রেডারদের পক্ষ থেকে মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।