মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যও বেড়েছে, আর যেকারণে ইউরোর মূল্য বেড়েছে ঠিক একই কারণে পাউন্ডের মূল্যও বেড়েছে। কয়েকদিন আগে এই পেয়ারের মূল্য একটি ডিসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইন ব্রেক করেছিল; গতকালের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কিন ডলারের জন্য অনুকূল ছিল না; এবং দীর্ঘমেয়াদে (যদিও দীর্ঘস্থায়ী কারেকশন চলছে) একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনও সক্রিয় রয়েছে। গত একমাসে কিছু অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের হতাশাজনক ফলাফল এবং ২০২৬ সালের বাজেট নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝেও বৈশ্বিক মৌলিক প্রেক্ষাপট ব্রিটিশ পাউন্ডের জন্য ইতিবাচক হিসেবে কাজ করছে। বাজেট-সংক্রান্ত চলমান সমস্যাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে পাউন্ডের মূল্যকে টেনে নিচে নামাতে পারবে না, কারণ বর্তমানে ব্রিটিশ সূচকগুলোর ফলাফল মার্কিন সূচকের তুলনায় খুব একটা খারাপ নয়—যুক্তরাষ্ট্রেও ধারাবাহিকভাবে দুর্বল ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। ফলে, আমরা এখনও মূলত এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করছি। প্রশ্ন হচ্ছে, দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান বৈশ্বিক কারেকশন কি শেষ হয়েছে? যদি হয়ে থাকে, তাহলে এখন থেকে এই পেয়ারের মূল্য $1.40 লেভেলের দিকে অগ্রসর হওয়া শুরু করতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

গতকাল ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে মোট চারটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। সকালে, 1.3096-1.3107 রেঞ্জ থেকে এই পেয়ারের মূল্য তিনবার বাউন্স করে, যার ভিত্তিতে নতুন ট্রেডাররা স্পষ্টভাবেই লং পজিশন ওপেন করতে পারে। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনে খুব একটা মুভমেন্ট দেখা যায়নি, কিন্তু মার্কিন সেশনে 1.3203-1.3211 লেভেল পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা গিয়েছিল, যেখানে প্রফিট নেওয়ার সুযোগ ছিল। 1.3203-1.3211 এরিয়া থেকে বাউন্সের পরও একটি সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে এই সেল সিগন্যালটি কিছুটা দেরিতে গঠিত হয়েছিল।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের আরেকটি নিম্নমুখী প্রবণতা এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়েছে এবং আমরা আশা করছি, এটি পূর্ববর্তী প্রবণতাগুলোর মতো এত দ্রুত শেষ হবে না। যেমনটি আমরা আগেও উল্লেখ করেছি, দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার জন্য কোনো বৈশ্বিক কারণ নেই, তাই মধ্যমেয়াদে কেবলমাত্র ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করা উচিত। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান কারেকশন বা ফ্ল্যাট মুভমেন্ট এখনও শেষ না-ও হয়ে থাকতে পারে এবং স্থানীয় সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়মিতভাবে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যকে প্রভাবিত করে, যা ট্রেডারদের জন্য ক্রয়ের সিদ্ধান্তকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
বুধবার, নতুন ট্রেডাররা 1.3203-1.3211 এরিয়া থেকে নতুন ট্রেডিং সিগন্যাল গঠনের প্রত্যাশা করতে পারেন। যদি মূল্য এই এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.3107-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্য এই এরিয়ার উপরে কনসলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.3259-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যুক্তিযুক্ত হবে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, 1.3574-1.3590।
বুধবার যুক্তরাজ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে টেকসই পণ্যের অর্ডার সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা ট্রেডারদের মনোভাবের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।