বুধবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, যদিও দিনের মধ্যে এই পেয়ার সাময়িকভাবে দরপতনের সম্মুখীন হয়েছিল। সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব তুলনামূলকভাবে দুর্বল ছিল। মূলত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত টেকসই পণ্যের অর্ডার সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনই উল্লেখযোগ্য ছিল, যা প্রত্যাশামাফিক মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করলেও সামগ্রিক পরিস্থিতিকে তেমনভাবে প্রভাবিত করেনি। কী দেখা গেছে? প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় কিছুটা ভালো এসেছে, যার ফলে ডলারের দর কিছুটা বেড়েছে। তবে, ঘন্টাভিত্তিক চার্টে কয়েক দিন আগে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে; দৈনিক চার্টে এখনো মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করছে এবং দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক পর্যায়ে এখনো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং, এই পেয়ারের মূল্যের সামান্য কারেকশন হয়েছে এবং ফের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে।
আমরা এখনো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, স্বল্প ও মধ্য-মেয়াদে ইউরোর দর বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকবে, কারণ বর্তমানে এই কারেন্সি পেয়ারের মূল্য 1.1400-1.1830 রেঞ্জের নিচের সীমানায় এসে পৌঁছেছে, তবে দীর্ঘমেয়াদে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, বুধবার কমপক্ষে তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1584 লেভেল থেকে রিবাউন্ড করে, এরপর 1.1571-1.1584 এরিয়ার নিচে কনসোলিডেশন করে। উভয় সিগন্যালই শেষ পর্যন্ত ভুল প্রমাণিত হয়েছে, যেখানে দ্বিতীয়টি মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রভাবে সক্রিয় হয়। আবারো 1.1571-1.1584 এরিয়াতে তৃতীয় বাই সিগন্যাল গঠিত হয়, এটি কাঙ্ক্ষিত দিকে তেমন শক্তিশালী মুভমেন্ট সৃষ্টি করেনি, যদিও এখনো সেটিকে ভুল সিগন্যাল ধরা যাচ্ছে না — আজও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে এবং লং পজিশন এখনো ওপেন রাখা যেতে পারে। মূলত, মার্কিন টেকসই পণ্যের অর্ডার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল বুধবারের পুরো টেকনিক্যাল চিত্রকেই কিছুটা ব্যাহত করেছে।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, নতুন করে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়েছে। সামগ্রিক মৌলিক এবং সামষ্টিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক রয়েছে, যার মানে কেবলমাত্র টেকনিক্যাল কারণেই ইউরোর দরপতন হতে পারে — দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনো ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে ট্রেডিং অব্যাহত রয়েছে। তবে, আমাদের প্রত্যাশা এই ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট শেষ হয়ে ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার, নতুন ট্রেডাররা আবারো 1.1571-1.1584 এরিয়া থেকে ট্রেডিং শুরু করতে পারেন। এই এরিয়ার ওপরে মূল্যের কনসোলিডেশন হলে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে, মূল্যের 1.1655-1.1666-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। একই এরিয়ায় নতুন করে রিবাউন্ড হলে পুনরায় লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে, এই এরিয়ার নিচে কনসোলিডেশন হলে শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হবে, যেখানে মূল্যের 1.1531-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, আজ ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970-1.1988।
বৃহস্পতিবার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। ফলে, আজ মার্কেটে অস্থিরতার মাত্রা কিছুটা সীমিত থাকতে পারে, তবে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।