বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বৃহস্পতিবার খুবই সীমিত মাত্রার অস্থিরতার সাথে EUR/USD কারেন্সি পেয়ার প্রায় সম্পূর্ণভাবে সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে ট্রেড করেছে। গতকাল সকালে আমরা সতর্ক করেছিলাম যে এ ধরনের মুভমেন্ট প্রত্যাশিত, কারণ বৃহস্পতিবার কোনো নির্ধারিত মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। শুধুমাত্র সকালে জার্মানি থেকে কনজিউমার কনফিডেন্স বা ভোক্তা আস্থা সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, তবে সেটির ফলাফল পূর্বাভাস অনুযায়ী হওয়ায় এটি ট্রেডারদের জন্য খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। এই কারণে, ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD-এর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠনের ধারা অব্যাহত থাকলেও, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বর্তমানে ইউরোর দর সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে না, যেভাবে বিগত কয়েক মাসে মার্কিন ডলারের মূল্য একপ্রকার "আকাশ থেকে পতিত" হয়ে বৃদ্ধি দেখিয়েছে। তাই এখন এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট আসন্ন ইভেন্ট ও প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

বৃহস্পতিবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ঠিক একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। মার্কিন ট্রেডিং সেশন শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1571-1.1584 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করেছিল কিন্তু মূল্য মাত্র প্রায় ১০ পিপস বৃদ্ধি পেয়েছিল। আবারও মনে করিয়ে দিই, যখন মার্কেট স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করছে, তখন ট্রেডারদের কাছে কোনো লেভেল বা সিগন্যাল থাকলেও, সেগুলোর কার্যকারিতা সীমিত থাকে। আজ সকালেও, এই পেয়ারের মূল্য পুনরায় 1.1571-1.1584 এলাকার কাছাকাছি অবস্থান করছে, তাই আবারও একটি বাউন্স দেখা যেতে পারে।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, নতুন করে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়েছে। সামগ্রিক মৌলিক এবং সামষ্টিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক রয়েছে, যার মানে কেবলমাত্র টেকনিক্যাল কারণেই ইউরোর দরপতন হতে পারে — দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনো ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে ট্রেডিং অব্যাহত রয়েছে। তবে, আমরা আশা করছি এই ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট শেষ হয়ে ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হবে। মার্কেটে এখনো স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
শুক্রবার নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1571-1.1584 এরিয়া থেকে ট্রেড করতে পারেন। এই পেয়ারের মূল্য এই লেভেলের উপরে কনসলিডেট করলে মূল্যের 1.1655-1.1666-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। এই লেভেল থেকে মূল্য বাউন্স করলে, আবারও লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হবে। এই পেয়ারের মূল্য এই লেভেলের নিচে নেমে গেলে কনসলিডেশন করলে শর্ট পজিশন গ্রহণযোগ্য হবে, যেখানে মূল্যের 1.1531-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, and 1.1970-1.1988। শুক্রবার ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, তবে জার্মানিতে চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। জার্মানি ইউরোজোনের একটি দেশ হলেও এটি ইউরোপীয় অর্থনীতির "ইঞ্জিন" হিসেবে পরিচিত। তাই দেশটির মুদ্রাস্ফীতি, খুচরা বিক্রি এবং বেকারত্ব সম্পর্কিত প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল প্রকাশের পরে মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।