বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য সামান্য পরিমাণে কারেকশন করেছে, যার ফলে মূলত বুধবারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পর কিছুটা দরপতন হয়েছে। মার্কেটে কোনো ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত না হওয়ায়, ট্রেডাররা নতুন করে ব্রিটিশ পাউন্ড কেনার জন্য কোনো দৃঢ় ভিত্তি খুঁজে পাননি — বিশেষ করে যখন সাম্প্রতিক সময়ে পাউন্ডের মূল্য উল্লেখযোগ্য ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম প্রদর্শনে ব্যর্থ হচ্ছে। আমাদের বিশ্লেষণ মতে, দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনো বৈশ্বিক পর্যায়ে নিম্নমুখী কারেকশন চলমান রয়েছে, তাই আমরা এখনও এই কারেকশনের সমাপ্তি এবং পূর্বের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি। যুক্তরাজ্যের বাজেট এখন আর ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের ওপর কোনো প্রভাব ফেলছে না, কারণ বাজেট ইতোমধ্যে গৃহীত হয়েছে এবং গত দুই মাসে মার্কেটের ট্রেডাররা এর নেতিবাচক দিকগুলো সফলভাবে প্রক্রিয়া করে ফেলেছে। তবে ডিসেম্বর মাস ঘনিয়ে আসছে, যার ফলে মার্কেটের ট্রেডাররা অবশেষে অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসের শ্রমবাজার, বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাতে পাবে। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কিন মুদ্রার একটি নতুন ও দীর্ঘমেয়াদী দরপতনের সূচনাবিন্দু হিসেবে কাজ করতে পারে। কারণ আমরা পূর্বেও বলেছি — বৈশ্বিক পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো বজায় রয়েছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের একেবারে শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3259 লেভেল থেকে বাউন্স করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে 1.3203-1.3211 এরিয়ায় নেমে আসে। ফলে, নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারতেন, যা থেকে আনুমানিক ৩০ পিপস মুনাফা অর্জন সম্ভব ছিল। 1.3203-1.3211 এরিয়া থেকে বাউন্সও একটি বাই সিগন্যাল হিসেবেও কাজ করতে পারত এবং সেটাকে কাজে লাগানো যেত। দিনের বাকি সময়জুড়ে, এই পেয়ারের মূল্য ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে — যার ফলে ঐ ট্রেড থেকে প্রায় ২০-২৫ পিপস মুনাফার সাথে ট্রেডটি ক্লোজ করা যেত।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের আরেকটি নিম্নমুখী প্রবণতা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়েছে, এবং আমরা আশা করছি এবার এটি পূর্বের অস্থায়ী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাগুলোর মতো দ্রুত শেষ হবে না। যেমনটা আমরা পূর্বেও উল্লেখ করেছি, দীর্ঘমেয়াদে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের পেছনে তেমন কোনো বৈশ্বিক কারণ বর্তমানে নেই, তাই মধ্যমেয়াদে আমরা শুধুমাত্র ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতারই প্রত্যাশা করছি। দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান কারেকশন বা ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখনো পুরোপুরিভাবে নাও শেষ হতে পারে, কিন্তু ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে পরিলক্ষিত যেকোনো স্থানীয় প্রবণতা বৈশ্বিক পর্যায়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে।
শুক্রবার নতুন ট্রেডাররা 1.3259 লেভেলের কাছে অথবা 1.3203-1.3211 এরিয়ার ভেতরে নতুন ট্রেডিং সিগন্যালের গঠন আশা করতে পারেন। আজ এই পেয়ারের মূল্যের আবারও দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কারণ আজ কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বর্তমানে বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, এবং 1.3574-1.3590। শুক্রবার যুক্তরাজ্য কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। সুতরাং, আজ মার্কেটে খুবই সীমিত মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।