মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মোট ৩২ পিপসের মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। ইউরোজোনের বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতির মতো তুলনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনও মার্কেটে উল্লেখযোগ্য কোনো মুভমেন্ট দেখা যায়নি। উভয় প্রতিবেদনেরই প্রত্যাশার চেয়ে ভিন্ন ও অপ্রত্যাশিত ফলাফল দেখা যায়, তবে ট্রেডাররা কার্যত ট্রেড করতেই চায়নি। তবে দিনের শেষে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা স্থির ছিল এবং মার্কিন ডলারের মূল্যের আরেকটি অযৌক্তিক ও বিশৃঙ্খল উত্থান এড়ানো গেছে। তাই স্বল্পমেয়াদে ও দীর্ঘমেয়াদে, আমরা এখনো শুধুমাত্র ইউরোর মূল্য বৃদ্ধিরই প্রত্যাশা করছি।এই সপ্তাহে বলা যায়, ট্রেডাররা এখন পর্যন্ত সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করছেন। সোমবার ISM উৎপাদন সূচকের ফলাফলে মার্কেটে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, এবং মঙ্গলবার প্রকাশিত বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়। দৈনিক টাইমফ্রেম এখনো এই পেয়ারের মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে অবস্থান করছে, যেখানে এই পেয়ারের মূল্য এই রেঞ্জের নিম্ন সীমা — 1.1400 লেভেলের কাছাকাছি থেকে বিপরীতমুখী হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাই আমরা আশা করছি উক্ত রেঞ্জের উপরের সীমা 1.1800 লেভেলের দিকে এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি ঘটবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, মঙ্গলবার কোনো ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়নি, এই পেয়ারের মূল্যের ৩২ পিপসের মুভমেন্ট বিবেচনায় এই বিষয়টিই। তাই নতুন ট্রেডারদের জন্য মার্কেটে এন্ট্রি করার জন্য কোনো ভিত্তি ছিল না।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, আবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে। সামগ্রিক মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি মার্কিন ডলারের জন্য বেশ নেতিবাচক রয়ে গেছে, তাই এখনও কেবল টেকনিক্যাল কারণে এই পেয়ারের দরপতন হতে পারে - দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনো ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে ট্রেডিং অব্যাহত রয়েছে। তবে, আমরা আশা করছি এই ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট শেষ হবে এবং ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আবার শুরু হবে। মার্কেটে এই পেয়ারের মূল্যের স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করছে।
বুধবার, নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1655–1.1666 এরিয়া থেকে ট্রেড করতে পারেন। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.1584–1.1571-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যাবে। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার উপরে কনসলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.1745–1.1754-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যাবে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, এবং 1.1970-1.1988। বুধবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প উৎপাদন, ADP শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং ISM পরিষেবা কার্যক্রম সূচক প্রকাশিত হবে। আবারও বলি, এগুলো যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হলেও, সেগুলোর ফলাফল মার্কেটে আদৌ কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে কিনা, সেই পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব নয়।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।