মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার "শোক সভার" মত নিস্তেজভাবে GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রথমত, কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই এই পেয়ারের আরও একবার দরপতন লক্ষ্য করা গেছে। দ্বিতীয়ত, মার্কেটের ট্রেডাররা পূর্বে দু'বার সাপোর্ট হিসেবে বিবেচিত 1.3203 লেভেলটিকে কার্যত উপেক্ষা করেছে। তৃতীয়ত, একটি স্থানীয় রেঞ্জ গঠনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। চতুর্থত, গতকাল এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা ছিল ৪৩ পিপস। এই ধরনের পরিস্থিতিতে খুব বেশি আশাব্যঞ্জকভাবে ট্রেডিং করার সুযোগ ছিল না। তবুও উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টার মাধ্যমে এখনও ব্রিটিশ পাউন্ড মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। তাই ধীরে হলেও এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এই পেয়ারের মূল্য খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলে মনে হচ্ছে না এবং স্বল্প সময়ে লাভজনক ট্রেডিংয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে না। বরং, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করে মন্থর ও ক্রমাগত "দুর্বল" মুভমেন্ট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়েছিল, তবে এই পেয়ারের মূল্যের মোট অস্থিরতার মাত্রা ৪৩ পিপসের মোট বিবেচনায় এই সিগন্যালগুলো থেকে লাভ করা বেশ কঠিন ছিল। 1.3203–1.3211 লেভেল এলাকায় দুইটি সেল সিগনাল গঠিত হয় এবং গভীর রাতে একটি বাই সিগনাল গঠিত হয়। উভয় সেল সিগনালের সময় এই পেয়ারের মূল্য সর্বোচ্চ ১৫ পিপসের মতো কমেছিল, যা থেকে ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করা সম্ভব হয়নি। তবে নতুন ট্রেডাররা যদি সন্ধ্যার আগেই তাদের শর্ট পজিশনগুলো ক্লোজ করে দিতেন, তাহলে কোনো লোকসানের সম্মুখীন হওয়ার কথা নয়, কারণ তখনই এটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, মার্কেটে আর কোনো বড় ধরণের মুভমেন্ট হবে না।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের স্থানীয় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো গঠিত হচ্ছে, তবে এটির মূল্য আবার একটি নতুন রেঞ্জে আটকে গেছে। পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে মার্কিন ডলারের মূল্যের স্থিতিশীল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য বৈশ্বিক পর্যায়ে কোনো মৌলিক কারণ নেই, তাই মধ্যমেয়াদে আমরা শুধুমাত্র এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকার প্রত্যাশা করছি। দৈনিক টাইমফ্রেমে কারেকশন বা রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্টের এখনো সমাপ্তি ঘটেনি, তবে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে গঠিত যেকোনো স্থানীয় প্রবণতা, পুনরায় বৈশ্বিক পর্যায়ে একই প্রবণতা শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে।
বুধবার, নতুন ট্রেডাররা 1.3203–1.3211 এরিয়া থেকে নতুন ট্রেডিং সিগনাল গঠনে প্রত্যাশা করতে পারেন, যেটিকে এখন ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে দৃশ্যমান রেঞ্জের নিম্ন সীমা হিসেবে বিবেচনা করা যায়। যদি এই এরিয়া থেকে মূল্যের বাউন্স হতে দেখা যায়, তাহলে মূল্যের 1.3259-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অপরদিকে, যদি মূল্য এই লেভেলের নিচে কনসলিডেট করে, তবে মূল্যের 1.3096–1.3107-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, 1.3574-1.3590। বুধবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না অথবা কোনো ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টও নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে রয়েছে ISM পরিষেবা কার্যক্রম সূচক, ADP শ্রমবাজার প্রতিবেদন এবং শিল্প উৎপাদন সম্পর্কিত প্রতিবেদন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।