বুধবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের স্থানীয় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে সামান্য একটি পুলব্যাকের পর পুনরায় ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়েছে। এটি মনে রাখা জরুরি যে, দৈনিক টাইমফ্রেমে 1.1400 এবং 1.1830 এর মধ্যে একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জ রয়েছে, যা গত পাঁচ মাস ধরে বজায় রয়েছে। এই সাইডওয়েজ চ্যানেলের নিচের সীমানার কাছে এই পেয়ারের মূল্যের বিপরীতমুখী মোমেন্টাম শুরু হওয়ার পর, শুধুমাত্র টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এই রেঞ্জের উপরের সীমানার দিকে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করা যেতে পারে। তাছাড়া, গত পাঁচ মাসে ইউরোর বিপরীতে ডলারের মূল্যের সঠিকভাবে করেকশন হয়নি এবং মৌলিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিলে, এই পর্যায়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনাই বেশি। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ADP থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থানের সংখ্যা 32,000 কমেছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক একটি ফলাফল। অন্যান্য প্রতিবেদনগুলোর (ISM ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক এবং শিল্প উৎপাদন) ফলাফল তুলনামূলকভাবে কিছুটা ভালো ছিলো; তবে, ১০ ডিসেম্বর ফেডারেল রিজার্ভ চলতি বছরের শেষ বৈঠকে বসবে, তাই শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদন এই মুহূর্তে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নন-ফার্ম পেরোল ও বেকারত্বের হার সংক্রান্ত প্রতিবেদন ফেডের বৈঠকের আগে প্রকাশিত হবে না, যার অর্থ হলো—ফেডারেল রিজার্ভ ADP থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেবে, যেটির ফলাফল পূর্বাভাসের তুলনায় দুর্বল এসেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, দিনের মধ্যে একটি মাত্র বাই সিগনাল গঠিত হয়েছে। মার্কিন ট্রেডিং সেশনের সময় এই পেয়ারের মূল্য 1.1655-1.1666 রেঞ্জ ব্রেক করে, যা নতুন ট্রেডারদের লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ দিয়েছে। তবে, এই পেয়ারের মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করে উপরের দিকে যাওয়ার পর মূলত মুভমেন্ট থেমে যায়। তা সত্ত্বেও, আজ যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে, তাহলে পুনরায় মুভমেন্ট শুরু হতে পারে।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠন অব্যাহত রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত নেতিবাচক রয়ে গেছে; তাই, আমরা এই পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। এমনকি টেকনিক্যাল কারণগুলোও এখন ইউরোর পক্ষে কাজ করছে, কেননা দৈনিক টাইমফ্রেমে ফ্ল্যাট রেঞ্জ এখনও বিদ্যমান রয়েছে, যেটির নিম্নসীমা থেকে এই পেয়ারের মূল্যের বিপরীতমুখী মোমেন্টাম শুরু হওয়ার পর শীর্ষ সীমার দিকে মুভমেন্টের যৌক্তিক পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবারে, নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1655-1.1666 এরিয়া থেকে ট্রেডিং করতে পারেন। এই এরিয়া থেকে এই পেয়ারের মূল্য বাউন্স করলে মূল্যের 1.1745-1.1754-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অপরদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার নিচে কনসলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.1584-1.1591-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
আজ 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখতে হবে: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, এবং 1.1970-1.1988।
বৃহস্পতিবার ইউরোজোনে খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে বেকারভাতা আবেদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই দুটি প্রতিবেদনের স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন হওয়ায় মার্কেটে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম। আজ নতুন ট্রেডারদের টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর উপরে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।