গতকাল প্রকাশিত ADP কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফলের কারণে মার্কিন ডলার উল্লেখযোগ্যভাবে দরপতনের শিকার হয়েছিল; তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিষেবা খাতের কার্যক্রম বৃদ্ধির শক্তিশালী ফলাফল আংশিকভাবে এই নেতিবাচক প্রভাবকে সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে।
ইনস্টিটিউট ফর সাপ্লাই ম্যানেজমেন্ট (ISM)-এর প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, পরিষেবা খাতভিত্তিক সূচক ০.২ পয়েন্ট বেড়ে ৫২.৬-এ পৌঁছেছে, যা গত নয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। মনে রাখতে হবে, ৫০-এর উপরের মান অর্থনীতির বেশিরভাগ খাতে প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে।

এই মিশ্র চিত্র মার্কেটে মার্কিন ডলারের ভবিষ্যত প্রবণতা নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। একদিকে, শ্রমবাজারের অস্থিতিশীলতা এবং অপ্রত্যাশিতভাবে কর্মসংস্থান হ্রাসের কারণে ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখন ফেডারেল রিজার্ভের আরও নমনীয় নীতিমালার প্রত্যাশা মূল্যায়নের মধ্যে নিয়ে এসেছেন, যা ঐতিহ্যগতভাবে মার্কিন ডলারের জন্য নেতিবাচক একটি বিষয় হিসেবে বিবেচিত।
অন্যদিকে, পরিষেবা খাতের কার্যক্রম বৃদ্ধি—যা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির একটি বড় অংশ প্রতিনিধিত্ব করে—অব্যাহত স্থিতিশীলতার সংকেত বহন করছে।
সূচকগুলোর আরও ঘনিষ্ঠ বিশ্লেষণে দেখা গেছে: ISM-এর সার্ভিস ও ম্যাটেরিয়াল মূল্য সূচক গত সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে মন্থর প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করেছে। যদিও এই সূচক এখনও ঐতিহাসিকভাবে উচ্চ মাত্রায় রয়েছে, এটি মুদ্রাস্ফীতির চাপ কিছুটা হ্রাস পাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। ডেলিভারি সূচক ৩.৩ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছে, যা এক বছরের বেশি সময়ের সর্বোচ্চ মানে পৌঁছেছে। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে সরকারি শাটডাউন থেকে উদ্ভূত বিমান পরিবহনে বিঘ্নতা এবং কাস্টমস শুল্কের সংশোধনকে উল্লেখ করা হচ্ছে।
ISM-এর সার্ভিস বিজনেস জরিপ কমিটির মতে, গত মাসে বারোটি খাতে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে—বিশেষ করে খুচরা বাণিজ্য, বিনোদন, এবং আতিথেয়তা ও খাদ্যসেবা খাতে। অন্যদিকে, নির্মাণ শিল্পসহ পাঁচটি খাতে পতন লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, "ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং নতুন অর্ডার সূচকের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি, একইসাথে ফেব্রুয়ারি থেকে সর্বোচ্চ পূর্ববর্তী সূচক—পরিষেবা খাতে উদীয়মান পুনরুদ্ধারের ইতিবাচক সংকেত।"
গৃহ বিক্রয় এখনো বন্ধকী সুদের হারের দ্বারা সীমিত রয়েছে। এই খাতের বেশিরভাগ প্রতিনিধিরা এই মন্থরতাকে একটি সচেতন বিরতি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, যখন সরবরাহকারী ও শ্রমিকরা নিকট ভবিষ্যতে মার্জিন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন।
ISM-এর একই প্রতিবেদন অনুসারে, গত সাত মাসের মধ্যে মজুদ সর্বোচ্চ গতিতে বেড়েছে। তবে, মজুদ সম্পর্কিত অভিমতে কিছুটা দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়েছে, যার মাধ্যমে বোঝা যায় অনেক কম পরিষেবা প্রদানকারীই এখন তাদের মজুতকৃত পণ্যের পরিমাণকে অত্যাধিক মনে করছেন।
EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্য 1.1680-এর উপরে নিয়ে যেতে হবে। মূল্য এই লেভেলে পৌঁছালেই কেবল 1.1705-এ পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে মূল্য 1.1725 পর্যন্ত উঠতে পারে, যদিও মার্কেটের বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া অর্জন করা কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1753-এর লেভেল। এই পেয়ারের মূল্য 1.1650 লেভেলের কাছাকাছি হ্রাস পেলে, সেখানে উল্লেখযোগ্য ক্রয় কার্যক্রম দেখা যাবে। যদি সেখানে ক্রেতারা সক্রিয় না হয়, তবে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1625-এ নেমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত হবে কিংবা 1.1590 থেকে লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে।
GBP/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুসারে, পাউন্ডের ক্রেতাদের মূল্যকে 1.3360 লেভেলের রেজিস্ট্যান্সে পুনরুদ্ধার করতে হবে। কেবল তখনই তারা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3395-এর লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যেতে পারবে, যেই লেভেল ব্রেক করে মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়া বেশ কঠিন হতে পারে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.3415 লেভেলের আশেপাশে। এই পেয়ারের মূল্য হ্রাস পেলে মূল্য 1.3320-এর কাছাকাছি থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করবে। তারা যদি এই রেঞ্জ ব্রেক করাতে সফল হয়, তাহলে এটি ক্রেতাদের জন্য বড় ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য কমে 1.3290-এ পৌঁছাতে পারে, এবং সম্ভাব্যভাবে 1.3270 পর্যন্ত দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি হবে।