বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের আবারও "না মাছ, না মাংস" ধরনের ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। সারাদিনব্যাপী সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব অত্যন্ত দুর্বল ছিল, যার কারণে মার্কেটে নতুন পজিশন ওপেন করার মতো কোনও যথাযথ ভিত্তি তৈরি হয়নি। সার্বিকভাবে এই সপ্তাহে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যার বেশিরভাগই মার্কেটে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। ইউরোজোনে প্রকাশিত প্রায় সব প্রতিবেদনের ফলাফল (যার মধ্যে কয়েকটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল) ট্রেডাররা উপেক্ষা করেছে, আর মার্কিন প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল কিছুটা মিশ্র ধরনের ছিল, যা মার্কেটে অনিশ্চিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ISM উৎপাদন সূচকের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল এসেছে, কিন্তু পরিষেবা খাতের অনুরূপ সূচকটির ফলাফল ট্রেডারদের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। মূল প্রতিবেদন হিসেবে যেটিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে—তা হলো ADP থেকে প্রকাশিত কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন, যদিও সাধারণভাবে এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয় না। কিন্তু বর্তমানে এটিই একমাত্র প্রতিবেদন যার মাধ্যমে মার্কিন শ্রমবাজার সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এই সূচকের ফলাফল প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী ডলারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে। দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনও ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট কার্যকর রয়েছে, ফলে এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রাও কম রয়ে গেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

বৃহস্পতিবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666 এরিয়ায় রিবাউন্ড করে এবং পরে এই রেঞ্জ ব্রেক করে ওপরে উঠে যায়। তবে উভয় ক্ষেত্রেই মূল্য ১৫ পিপস-ও ওপরে ওঠেনি যাতে ব্রেক-ইভেন পয়েন্টে স্টপ লস সেট করা যায়। বৃহস্পতিবার এই পেয়ারের মূল্যের সামগ্রিক অস্থিরতার পরিমাণ ছিল মাত্র ৪০ পিপস।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। মার্কিন ডলারের জন্য মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো নেতিবাচক রয়ে গেছে; ফলে আমরা এই পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। এমনকি টেকনিক্যাল দিক থেকেও ইউরো সহায়তা পাচ্ছে, কারণ দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখনো বজায় রয়েছে, এবং নিচের সীমানা থেকে মূল্য বিপরীতমুখী হওয়ার পর এখন এই রেঞ্জের শীর্ষ সীমানার দিকে মুভমেন্ট হওয়াই যৌক্তিক।
শুক্রবার, নতুন ট্রেডাররা সম্ভবত আবারও 1.1655–1.1666 এরিয়া থেকে ট্রেড ওপেন করার কথা বিবেচনা করতে পারেন, কারণ অন্য কোনো কার্যকর ট্রেডিং এরিয়া আপাতত নেই। এই এরিয়া থেকে যদি মূল্য নিচের দিকে বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.1584–1.1591-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অপরদিকে, এই এরিয়ার উপরে কনসোলিডেশনের হলে মূল্যের 1.1745 পর্যন্ত যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হবে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য যে লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527–1.1531, 1.1550, 1.1584–1.1591, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, এবং 1.1970–1.1988।
শুক্রবার, ইউরোজোনের তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত হবে ব্যক্তিগত আয় এবং ব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন, কোর পার্সোনাল কনজাম্পশন এক্সপেনডিচার প্রাইস ইনডেক্স (PCE) এবং মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোক্তা আস্থা সূচক। যদিও এই প্রতিবেদনগুলোকে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না, তবে এগুলোর ফলাফল মার্কেটে কিছুটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।