বুধবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

বুধবার GBP/USD পেয়ারের মুভমেন্ট EUR/USD পেয়ারের মতোই ছিল, তবে শুধুমাত্র সন্ধ্যার দিকে এই সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে। এই সপ্তাহে ইউরো আর পাউন্ডের মুভমেন্টে মূল্য পার্থক্য ছিল ব্রিটিশ পাউন্ডের অযৌক্তিকভাবে ও অকারণে দরপতন ঘটেছে, যেটির জন্য আবারও যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি চিফ র্যাচেল রিভস দায়ী ছিলেন। বিস্তারিত তথ্যে না গিয়ে শুধু বলা যায়, এমনকি ফেডের বৈঠকের আগেই পাউন্ডের দরপতন শুরু হয়েছিল—যা একরকম হাস্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের প্রভাবে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট ঠিক আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ীই ঘটেছে। কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই পেয়ারটির আকস্মিকভাবে দরপতন ঘটে, কারণ জেরোম পাওয়েল ডিসেম্বর মাসে আরও সুদের হার হ্রাসের কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি, যা ট্রেডারদের জন্য বড় রকমের হতাশা ছিল। যদিও আজ বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেছে যে, ফেডের ফলাফল ঘোষণার আগে যেখানে ছিল এই পেয়ারের মূল্য সেই অবস্থানেই ফিরে এসেছে। এখনো ডলারের মূল্য মূল্য বৃদ্ধির কোনো বাস্তবিক ভিত্তি দেখা যাচ্ছে না, এবং সম্ভবত আগামী সপ্তাহে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড মূল সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার তিনটি সাধারণ মানের ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। পেয়ারটির মূল্য 1.3203-1.3211 এরিয়া থেকে দুইবার বাউন্স করে, যার ফলে একই ধরনের দুটি সিগন্যাল গঠিত হয়, কিন্তু কার্যকর করার মতো শুধুমাত্র একটি ট্রেড ছিল। এই ট্রেডে কোনো লোকসান হয়নি, কারণ পাউন্ডের মূল্য ২০ পিপস বেড়েছিল। ফেডের বৈঠকের ফলাফল ঘোষণার পরপরই তীব্র দরপতন হয় এবং পেয়ারটির মূল্য 1.3203-1.3211 এরিয়াটির নিচে নেমে যায়, কিন্তু এই সিগন্যাল কাজে লাগানোর সুযোগ পাওয়া যায়নি, তাই এই ট্রেড না করাই যথার্থ ছিল।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
এক ঘন্টার টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হতে শুরু করলেও তা খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে যেকোনো কারণেই হোক ব্রিটিশ পাউন্ড আবারও দরপতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, ডলারের মূল্যের দীর্ঘমেয়াদি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য বাস্তবিক অর্থে তেমন কোনো ভিত্তি নেই, তাই মধ্যমেয়াদে আমাদের দৃষ্টিতে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি যৌক্তিক। তবে, দীর্ঘমেয়াদে ফ্ল্যাট রেঞ্জ বা কনসোলিডেশনের প্রভাব অব্যাহত থাকায় এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক একটি পরিস্থিতি।
বৃহস্পতিবার, নতুন ট্রেডাররা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে 1.3203-1.3211 এরিয়া থেকে ট্রেড করতে পারেন, যেখানে এই পেয়ারের মূল্য বর্তমানে অবস্থান করছে। যদি এই এরিয়া ব্রেক করে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়, তাহলে লং পজিশনের কথা ভাবা যেতে পারে, যার যেখানে মূল্যের 1.3259 এবং এর উপরের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। আবার, মূল্য এই এরিয়া থেকে বাউন্স করলে শর্ট পজিশনের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যেখানকার মূল্যের 1.3102-1.3107 লেভেলের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে এখন ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলোতে দৃষ্টি দেয়া যেতে পারে সেগুলো হলো: 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3102-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, 1.3574-1.3590, 1.3643-1.3652। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই, তাই দিনের বেলা এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা অনেকটাই কম থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।