সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের পর্যালোচনা:

বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। যদিও এর মধ্যে কয়েকটি প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কেটে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিক্রিয়া নাও সৃষ্টি করতে পারে, তবে কয়েকটি প্রতিবেদনের গুরুত্ব বিবেচনা করলে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য মুভমেন্টের আশা করাই যৌক্তিক। জার্মানিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে রয়েছে বেকারত্বের হার, বেকার ভাতা আবেদনের সংখ্যা, তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি (প্রাথমিক অনুমান), এবং মূল্যস্ফীতি সম্পর্কিত প্রতিবেদন। এছাড়াও, ইউরোজোনের তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে। উভয় ক্ষেত্রেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নমিনাল ভ্যালু প্রকাশিত হবে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:

আজ যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে বৃহস্পতিবারের একমাত্র ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রেক্ষাপট নির্দেশ করে। মনে করিয়ে দেই, গত রাতে ফেডারেল রিজার্ভ তাদের মূল সুদের হার ০.২৫% কমানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা আগে থেকেই অনেকাংশে প্রত্যাশিত ছিল। জেরোম পাওয়েল সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা পূর্বানুমান অনুযায়ী বেশ "সাধারণ" ছিল — তিনি জানান যে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত পূর্বনির্ধারিত নয় এবং পুরোপুরিভাবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ওপর নির্ভরশীল হবে। এমন "নিরপেক্ষ" ফলাফলই মার্কেটে ভোলাটিলিটি সৃষ্টি করেছে।
তাই আজ, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন (সম্ভবত সুদের হার অপরিবর্তিত থাকবে), অথবা ক্রিস্টিন ল্যাগার্দের বক্তব্য যতটাই সাধারণ হোক না কেন—মার্কেটে আজও ভোলাটিলিটি অব্যাহত থাকতে পারে। আবারও ট্রেডাররা আবেগনির্ভরভাবে ট্রেডিং করতে পারে।
উপসংহার:
সপ্তাহের একেবারে শেষদিকের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের আবারো এলোমেলো বা বিশৃঙ্খল ট্রেডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ যেকয়টি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে তাতে মার্কেট একবারে নিষ্ক্রিয় থাকবে না—সাথে ইসিবির বৈঠক ও লাগার্ডের বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে, যা একপ্রকার "বোনাস" হিসেবে কাজ করবে।
EUR/USD পেয়ারের ক্ষেত্রে ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনো মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জে রয়েছে, তাই ট্রেডাররা মূল্য এই ফ্ল্যাটের সীমানায় থাকা অবস্থায় ট্রেড করতে পারেন। বিশেষ করে 1.1571-1.1584 এবং 1.1655-1.1666 এরিয়া দুটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং জোন হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রে, একটি চমৎকার ট্রেডিং এরিয়া হচ্ছে 1.3203-1.3211, যেখানে পেয়ারটি বর্তমানে ট্রেড করছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।